আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে, অস্ট্রেলিয়া রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের উপর নির্ধারিত মূল্যসীমা ৬০ ডলার থেকে কমিয়ে ৪৭.৬০ ডলারে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ২০২৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার তেলের বাজার মূল্য হ্রাস করা এবং দেশটির যুদ্ধ অর্থনীতিতে অর্থের প্রবাহ সীমিত করা। অস্ট্রেলিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং জাপানের মতো অংশীদারদের সঙ্গে এই যৌথ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মূল্যসীমা কমানোর পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়া রাশিয়ার "ছায়া নৌবহরের" (shadow fleet) আরও ৯৫টি জাহাজকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে। এর ফলে, ২০২৫ সালের জুন মাস থেকে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক নিষিদ্ধ ছায়া নৌবহরের জাহাজের মোট সংখ্যা ১৫০টিরও বেশি হয়েছে। এই জাহাজগুলি রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে এবং প্রতারণামূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে তার যুদ্ধ অর্থনীতিকে সমর্থন করতে ব্যবহৃত হয়। এই ছায়া নৌবহরের জাহাজগুলি প্রায়শই পতাকা পরিবর্তন, ট্র্যাকিং সিস্টেম নিষ্ক্রিয়করণ এবং অপর্যাপ্ত বীমা নিয়ে চলাচল করে, যা গুরুতর পরিবেশগত ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে।
রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় অস্ট্রেলিয়া সরকার এ পর্যন্ত ১,৬০০ টিরও বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন যে এই পদক্ষেপগুলি রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিকে তেলের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করতে সহায়তা করবে। অস্ট্রেলিয়া রাশিয়ার আগ্রাসনকে অর্থায়ন করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য সমন্বিত ও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা অস্ট্রেলিয়ার এই দৃঢ় সমর্থন এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি আনুগত্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এই পদক্ষেপগুলি বিশ্বব্যাপী রাশিয়ার উপর চাপ বাড়ানোর বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ, যা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ইউক্রেন তার অংশীদারদের এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জোরদার করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। জি৭ দেশগুলি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রথম রাশিয়ার তেলের মূল্যসীমা নির্ধারণ করেছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ববাজারে অতিরিক্ত অস্থিরতা সৃষ্টি না করে রাশিয়ার তেল বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করা এবং যুদ্ধ তহবিল হ্রাস করা।
অস্ট্রেলিয়ার মতো পদক্ষেপে তেলের মূল্যসীমা কমানোর মূল উদ্দেশ্য হলো রাশিয়ার কাঁচা তেলকে বাজারমূল্যের নিচে রাখা, এটিকে কম আকর্ষণীয় করা এবং সামরিক অভিযানগুলোর অর্থায়ন কঠিন করা। মূল কৌশলটি হলো রাশিয়াকে অতিরিক্ত শক্তি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা, পাশাপাশি বৈশ্বিক শক্তি বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করা।