রুশ বাহিনী জাপোরিঝঝিয়া, লভিভ এবং কোলোমিয়াতে সমন্বিত আক্রমণ চালিয়েছে; হতাহতের খবর পাওয়া গেছে

সম্পাদনা করেছেন: S Света

২০২৫ সালের ৪-৫ অক্টোবর রাতে, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া, লভিভ এবং ইভান-ফ্রাঙ্কভস্ক ওব্লাস্টের কোলোমিয়া শহরগুলিতে সমন্বিত আক্রমণ চালিয়েছে। ড্রোন এবং গাইডেড বোমা ব্যবহার করে এই হামলায় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে, বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন।

জাপোরিঝঝিয়া শহরে, এই রাতের হামলায় অন্তত ১০টি ড্রোন এবং গাইডেড বোমা ব্যবহার করা হয়। জাপোরিঝঝিয়া ওব্লাস্টের সামরিক প্রশাসনের প্রধান ইভান ফেদোরভ জানিয়েছেন যে, এই আক্রমণের ফলে শহরের কিছু অংশে বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং আবাসিক ভবনগুলিতেও আঘাত লাগে। ৭৩,০০০ এরও বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিলেন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, একজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়েও রয়েছে। তবে, জাপোরিঝঝিয়া ওব্লাস্টের সামরিক প্রশাসনের প্রধান ইভান ফেদোরভ জানিয়েছেন যে, এই হামলায় একজন নিহত এবং নয়জন আহত হয়েছেন। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরে যায়, বহু তলার ভবনের জানালা ভেঙে যায়, বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়ে যায় এবং একটি ব্যক্তিগত বাড়ির উঠোনেও ক্ষতি হয়। এই ঘটনাগুলি শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করেছে, তবে জরুরি পরিষেবাগুলি দ্রুত মেরামতের কাজে নেমে পড়েছে।

একই রাতে, লভিভ এবং কোলোমিয়া শহরও আক্রমণের শিকার হয়। ভোর ৪টার পর লভিভ শহরে বেশ কয়েকটি রুশ স্ট্রাইক ইউএভি দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং ভোর ৫টার পর শহরটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোলোমিয়াতে একটি টিইটিএস (TETS) লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও এই তথ্যের এখনও আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ হয়নি। ইভান-ফ্রাঙ্কভস্ক অঞ্চলের বুশটিন এবং লভিভ অঞ্চলের স্ট্রিইতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

এর আগে, ২০২৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর, ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জাপোরিঝঝিয়ার উপর একটি রুশ Su-34 সামরিক বিমান ভূপাতিত করার খবর জানিয়েছিল। ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনাটি ভোর ৪টার দিকে ঘটেছিল যখন বিমানটি "শহরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে গাইডেড বোমা নিক্ষেপ" করছিল।

এই ধরনের আক্রমণগুলি রাশিয়ার Su-34 ফাইটার-বোমার ব্যবহারকে তুলে ধরেছে। Su-34 একটি শক্তিশালী বিমান যা ২০০৬ সাল থেকে উৎপাদিত হচ্ছে এবং এটি গাইডেড বোমা ব্যবহার করে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। মোট প্রায় ১৫০টি এমন বিমান তৈরি করা হয়েছে। এই ক্ষমতা বিমানগুলিকে ইউক্রেনীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নাগালের বাইরে থেকে আক্রমণ চালাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে জাপোরিঝঝিয়া এবং খারকিভের মতো সীমান্ত শহরগুলি এই ধরনের হামলার জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। এই হামলাগুলি ইউক্রেনের জ্বালানি পরিকাঠামোর উপর রাশিয়ার ধারাবাহিক আক্রমণের একটি অংশ।

যদিও এই ধরনের হামলা ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হয়েছে, ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ এবং নাগরিকরা দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এই ঘটনাগুলি কেবল ধ্বংসের চিত্রই তুলে ধরে না, বরং প্রতিকূলতার মুখে মানবজাতির সহনশীলতা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে পুনর্গঠনের সম্ভাবনাকেও নির্দেশ করে। প্রতিটি চ্যালেঞ্জ নতুন করে গড়ে তোলার এবং আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি করে।

উৎসসমূহ

  • Deutsche Welle

  • Слово и Дело

  • Euronews

  • Справжнє

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।