সার্বিয়ার নভি সাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছেন, যারা প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুচিচ এবং তার ক্ষমতাসীন দলের কাছ থেকে অবিলম্বে নির্বাচন ও জবাবদিহিতা দাবি করছেন। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে।
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়, যা সার্বিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচন করে। এই গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের নভেম্বরে নভি সাদের একটি রেলওয়ে স্টেশনে ছাদ ধসে পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে, যেখানে ১৬ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছিলেন। বিক্ষোভকারীরা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্য সরকারের দুর্নীতি ও নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেছেন এবং অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি তুলেছেন।
নভি সাদের ফিলোসফি অনুষদের কাছে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়েছিলেন, যেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। প্রেসিডেন্ট ভুচিচ জানিয়েছেন যে এই সংঘর্ষে ১১ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে বিদেশী বিশেষ বাহিনী এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে এবং দেশের অন্যান্য শহরে অননুমোদিত সমাবেশ আয়োজনে সহায়তা করছে।
এই বিক্ষোভগুলি কেবল একটি নির্দিষ্ট ঘটনার প্রতিবাদ নয়, বরং এটি সার্বিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের গভীর অসন্তোষের প্রতিফলন। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর জোর দিচ্ছেন। তারা মনে করেন, সরকারের দমন-পীড়ন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই তাদের নৈতিক দায়িত্ব। এই প্রতিবাদের ঘটনাগুলি সার্বিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গভীর পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। জনগণ এখন স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চায়। নভি সাদের এই আন্দোলন দেশের অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে, যা একটি বৃহত্তর জাতীয় জাগরণের সূচনা করেছে। এই পরিস্থিতি সার্বিয়ার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।