আগস্ট ৬, ২০২৫, মস্কো – ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মস্কোতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই আলোচনায় উভয় পক্ষই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা জানিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে আশার সঞ্চার করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বৈঠকটিকে 'অত্যন্ত ফলপ্রসূ' বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে 'বড় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে'। তিনি ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং যুদ্ধের অবসানে একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়েছেন। ট্রাম্পের মতে, সকলেরই এই যুদ্ধ শেষ করার ব্যাপারে ঐকমত্য রয়েছে এবং আগামী দিন ও সপ্তাহগুলোতে এই লক্ষ্যে কাজ করা হবে।
ক্রেমলিন জানিয়েছে যে পুতিন ও উইটকফের মধ্যে একটি 'উপকারী ও গঠনমূলক' আলোচনা হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন যে উভয় পক্ষ ইউক্রেন সংকট নিয়ে আলোচনা করেছে এবং ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেছে। ক্রেমলিন প্রেসিডেন্ট পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে একটি বৈঠকের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে, তবে এর জন্য পূর্বশর্ত হিসেবে কিছু কারিগরি প্রস্তুতির প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে। এই কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তারা মস্কোতে অনুষ্ঠিত আলোচনা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মত বিনিময় করেন। জেলেনস্কি ইউক্রেনের স্বাধীনতা রক্ষায় দেশটির অঙ্গীকারের উপর জোর দিয়েছেন এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী ও নির্ভরযোগ্য শান্তির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাশিয়াকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা (আগস্ট ৮) বেঁধে দেওয়া হয়েছে এবং এই সময়সীমার মধ্যে অগ্রগতি না হলে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এই বৈঠকের পরেও মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে যে তারা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা বজায় রেখেছে। এই কূটনৈতিক উদ্যোগ সত্ত্বেও, ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার সামরিক আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শীঘ্রই পুতিনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। ন্যাটো জোট ইউক্রেনকে সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে, যা এই সংঘাতের আন্তর্জাতিক মাত্রাকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।