লিথুয়ানিয়ার সরকার এই গ্রীষ্মে নজিরবিহীন বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট তীব্র কৃষি ক্ষতির মুখে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এই অস্বাভাবিক আবহাওয়ার কারণে দেশের প্রায় ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত বা নষ্ট হয়ে গেছে। জুলাই মাসে, লিথুয়ানিয়ার কিছু অংশে একদিনে স্বাভাবিক মাসের বৃষ্টিপাতের সমান বৃষ্টি হয়েছে। দেশের গড় বৃষ্টিপাত মাসিক স্বাভাবিকের চেয়ে ১৬৭ শতাংশ বেশি ছিল, এবং কিছু অঞ্চলে এই পরিমাণ দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। এই অতিবৃষ্টির ফলে কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে, যা ফসল সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি করেছে এবং ফসলের গুণমান হ্রাস করেছে। অনেক কৃষক তাদের ফসল মাঠে ফেলে রাখতে বাধ্য হয়েছেন, যা পচন এবং আরও ক্ষতির কারণ হয়েছে।
এই পরিস্থিতি কেবল লিথুয়ানিয়াতেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রতিবেশী লাটভিয়াও একই কারণে কৃষি খাতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। লাটভিয়ার কৃষিমন্ত্রী আরমান্ডস ক্রাউজে জানিয়েছেন যে তাদের দেশের ফসলও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তা সংগ্রহ করা সম্ভব নাও হতে পারে। এই ঘটনাটি বাল্টিক অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলির ক্রমবর্ধমান ফ্রিকোয়েন্সি তুলে ধরে। ঐতিহাসিকভাবে, লিথুয়ানিয়ার জুন এবং জুলাই মাসের বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা বছরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল, যা কেবল ২০০৭ সালের বৃষ্টিপাতের চেয়ে কম। এই ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলি খাদ্য নিরাপত্তা এবং জাতীয় অর্থনীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়। এই জরুরি অবস্থা কৃষকদের তাদের আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণে নমনীয়তা প্রদান করবে এবং তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়তা করবে। এই পদক্ষেপটি কৃষকদের পরবর্তী মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নিতে এবং তাদের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সক্ষম করবে। এই সংকট মোকাবেলায় লিথুয়ানিয়া এবং লাটভিয়া উভয় দেশই ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে সহায়তার আবেদন করেছে, যা এই অঞ্চলের কৃষিখাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।