ইয়েমেনের রাজধানী সানায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের হামলায় কমপক্ষে ১১ জন কর্মী আটক হয়েছেন। হামলার শিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফ (UNICEF)। এই ঘটনাটি ২৮শে আগস্ট সানায় হুথি প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাওয়ি এবং তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হওয়ার ঘটনার পর পরই সংঘটিত হয়েছে, যা এই আটকের প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং আটককৃত সকল কর্মীর অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি নিশ্চিত করেছে যে তাদের সানায় অবস্থিত কার্যালয়ে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী প্রবেশ করে একজন কর্মীকে আটক করেছে। অন্যান্য অঞ্চলেও আরও আটকের খবর পাওয়া গেছে এবং আটককৃতদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জানতে হুথি কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি আবেদন জানানো হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও এই আটকের নিন্দা জানিয়েছে এবং সকল জাতিসংঘের ও এনজিও কর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। ইইউ জোর দিয়ে বলেছে যে এই ধরনের কর্মকাণ্ড ইয়েমেনি জনগণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় মানবিক সহায়তা প্রদানে বাধা সৃষ্টি করছে। এই ঘটনাটি ইয়েমেনে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ঘটেছে, যেখানে জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ সহায়তার উপর নির্ভরশীল।
স্টাফদের নিরাপত্তার উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ পূর্বে হুথি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছিল। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, জানুয়ারিতে আটজন কর্মী আটকের পর জাতিসংঘ সায়দা প্রদেশে তাদের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে। হুথি বিদ্রোহীদের এই কর্মকাণ্ড ইয়েমেনের মানবিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হুথি বিদ্রোহীদের জাতিসংঘের কার্যালয় ও কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করার উদ্দেশ্য, আটকের নির্দিষ্ট কারণ এবং ইয়েমেনে চলমান মানবিক কার্যক্রমের উপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 'ইরান-সমর্থিত' বিদ্রোহী হিসেবে বর্ণনা করার কারণে হুথি কর্মকাণ্ডে ইরানের ভূমিকাও পরোক্ষভাবে উত্থাপিত হয়েছে।