ইউরোপীয় ফার্মাসিউটিক্যাল স্টকগুলিতে মার্কিন ১০০% শুল্কের হুমকির প্রভাব

সম্পাদনা করেছেন: gaya ❤️ one

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউরোপীয় ব্র্যান্ডেড এবং পেটেন্টযুক্ত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের উপর ১০০% শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর ইউরোপীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলির শেয়ারের দামে উল্লেখযোগ্য পতন দেখা গেছে। এই নতুন বাণিজ্য নীতি, যা ১ অক্টোবর, ২০২৫ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন সুবিধা স্থাপনের জন্য ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলিকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। তবে, যেসব কোম্পানি ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করেছে বা নির্মাণাধীন রয়েছে, তাদের জন্য এই শুল্ক থেকে ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই ঘোষণার ফলে, নোভো নরডিস্ক, রোচে, নোভাটিস এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার মতো প্রধান ইউরোপীয় ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলির শেয়ার Tradegate প্ল্যাটফর্মে প্রায় ১.৮% থেকে ২% পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। এই ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী ফার্মাসিউটিক্যাল সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ইউরোপীয় কমিশন এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলি এই নতুন শুল্ক নীতির সম্ভাব্য প্রভাব মূল্যায়ন করছে। যদিও পূর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি হয়েছিল, যেখানে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের উপর শুল্কের সর্বোচ্চ সীমা ১৫% নির্ধারণ করা হয়েছিল, এই নতুন ঘোষণা সেই চুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলিকে তাদের উৎপাদন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত করতে উৎসাহিত করা। এই নীতির অধীনে, যেসব কোম্পানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্ল্যান্ট নির্মাণ শুরু করেছে বা নির্মাণাধীন রয়েছে, তারা এই শুল্ক থেকে অব্যাহতি পাবে।

এই ছাড়ের কারণে, অনেক বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, রোচে এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়েছে। এই বিনিয়োগগুলি কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকেই শক্তিশালী করবে না, বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও সহায়ক হবে। এই নতুন শুল্ক নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলেও পরিবর্তন আনতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান (API) এবং জেনেরিক ওষুধের জন্য চীন ও ভারতের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এই নির্ভরতা কমাতে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের দুর্বলতা দূর করতে এই নীতি সহায়ক হতে পারে। তবে, এই শুল্কের ফলে মার্কিন ভোক্তাদের জন্য ওষুধের দাম বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে, কারণ ব্র্যান্ডেড ওষুধের দাম ইতিমধ্যেই অনেক বেশি। এই পরিস্থিতি ইউরোপীয় ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কোম্পানিগুলি তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং মার্কিন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সম্ভাব্য সমাধান খুঁজছে। এই বাণিজ্য বিরোধের নিষ্পত্তি এই খাতের স্থিতিশীলতা এবং বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদন এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের উপর ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

উৎসসমূহ

  • Reuters

  • U.S. to impose 100% tariff on branded, patented drugs unless firms build plants locally, Trump says

  • Trump's 'Liberation Day' tariffs seem to spare drugs—for now

  • Industry warns EU of pharma exodus to US amid Trump tariff threats

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।