হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের, অস্ত্র সমর্পণের চুক্তি অস্বীকার হামাসের

সম্পাদনা করেছেন: Татьяна Гуринович

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের ১৪ই অক্টোবর গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ অবিলম্বে শুরু করার কথা ঘোষণা করেছেন। এই নতুন ধাপের মূল ফোকাস হলো হামাস গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণরূপে নিরস্ত্রীকরণ করা। হোয়াইট হাউসের প্রধান সাংবাদিকদের সামনে অত্যন্ত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন যে, যদি এই গোষ্ঠী নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি পালন না করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের জোরপূর্বক নিরস্ত্র করতে বাধ্য হবে। ৯ই অক্টোবর শার্ম-এল-শেখ-এ স্বাক্ষরিত চুক্তির প্রথম পর্ব সমাপ্ত হওয়ার পরই ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এই কঠোর ও সরাসরি বিবৃতিটি আসে, যা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০-দফা পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হলো হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, যা গাজায় দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই সমাধানের জন্য অপরিহার্য। প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন যে তিনি একটি “মধ্যম সময়ের মধ্যে” এই নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন দেখতে চান। তিনি কঠোর ভাষায় সতর্ক করে বলেন, “তারা বলেছিল যে তারা নিরস্ত্র হবে, আর যদি তারা তা না করে, তবে আমরা তাদের নিরস্ত্র করব। তারা জানে যে আমি কোনো খেলা খেলছি না।” ট্রাম্প আরও ইঙ্গিত দেন যে নিরস্ত্রীকরণের এই পদক্ষেপটি “দ্রুত এবং সম্ভবত নৃশংসভাবে” সম্পন্ন হতে পারে। এই আল্টিমেটামটি গাজার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি অপরিহার্য শর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ছাড়া শান্তি প্রক্রিয়া এগোতে পারবে না।

নিরস্ত্রীকরণের এই দাবির প্রতি হামাসের প্রতিক্রিয়া ছিল প্রত্যাশিতভাবেই অত্যন্ত নেতিবাচক এবং কঠোর। গোষ্ঠীর একজন সরকারি মুখপাত্র আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে অস্ত্র সমর্পণের যেকোনো সম্ভাবনাকে প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি অস্ত্র হস্তান্তরকে “অগ্রহণযোগ্য এবং আলোচনার অযোগ্য” বলে অভিহিত করেন। হামাসের পক্ষ থেকে এই সরাসরি অস্বীকার দ্বিতীয় ধাপে মসৃণভাবে প্রবেশ করার সম্ভাবনাকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। উল্লেখ্য, এই দ্বিতীয় ধাপটি ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলটির পুনর্গঠন শুরু করার পূর্বশর্ত হিসেবে নির্ধারিত ছিল।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের হতাহতের ঘটনা অব্যাহত থাকার খবর আসায় পরিস্থিতি এখনও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। এই সংঘাতপূর্ণ পরিবেশে, হামাসের কঠোর অবস্থান শান্তি আলোচনার ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হামাসের নিরস্ত্রীকরণে অস্বীকৃতি শান্তি প্রক্রিয়ার সামগ্রিক যুক্তিকেই হুমকির মুখে ফেলেছে। এই প্রক্রিয়ায় নিরস্ত্রীকরণকে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং এই অঞ্চলের ভবিষ্যতের শাসন পরিচালনার জন্য একটি প্রয়োজনীয় “পারস্পরিক ছাড়” হিসেবে দেখা হয়েছিল। যদি হামাস অস্ত্র ত্যাগ না করে, তবে এটি কেবল দ্বিতীয় ধাপের শুরুকেই নয়, বরং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা এবং গাজার দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা অর্জনের প্রচেষ্টাকেও ব্যাহত করবে। হামাসের এই অনমনীয় অবস্থান পুরো শান্তি উদ্যোগের স্থায়িত্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

উৎসসমূহ

  • Fox News

  • Trump Announces a Deal on Phase One of a Gaza Deal - The Soufan Center

  • Hamas Refutes Claims of a Disarmament Agreement

  • Palestinian Hamas denies reports of gradual disarmament agreement

  • Doha, Oct 11, 2025 (AFP) - Hamas official says disarmament 'out of the question' | NAMPA

  • Israel-Hamas Ceasefire Deal: October 2025 Agreement Explained | GovFacts

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।