কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা একটি বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে কারণ এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো (ডিআরসি) সরকার দোহার শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করতে ব্যর্থ হয়েছে। উভয় পক্ষই ১৮ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে কাতারের রাজধানী দোহার একটি চূড়ান্ত শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য নির্ধারিত ছিল, কিন্তু এই সময়সীমা অতিক্রান্ত হয়েছে। এই ব্যর্থতা অঞ্চলে চলমান সংঘাত এবং বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
এম২৩ গোষ্ঠী ১৭ আগস্ট ঘোষণা করেছে যে তারা চুক্তিতে অংশ নেবে না, কারণ তারা কঙ্গো সেনাবাহিনীর দ্বারা পূর্বের চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। যদিও তারা পরের দিনগুলোতে প্রতিনিধি পাঠানোর সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছে, তবে চুক্তি স্বাক্ষরের এই ব্যর্থতা শান্তি প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই ঘটনাটি পূর্ব ডিআরসি-তে চলমান সহিংসতা এবং বেসামরিক নাগরিকদের উপর এর ভয়াবহ প্রভাবের মধ্যে ঘটেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে যে জুলাই মাসে এম২৩ বিদ্রোহীদের দ্বারা কমপক্ষে ৩১৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যার মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক এই সহিংসতাকে "ভয়াবহ" বলে নিন্দা করেছেন এবং অবিলম্বে সকল আক্রমণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কাতার কর্তৃক মধ্যস্থতা করা এই শান্তি আলোচনায়, উভয় পক্ষই একটি যুদ্ধবিরতি এবং আরও আলোচনার জন্য নীতিমালার একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছিল।
তবে, এম২৩ জানিয়েছে যে বন্দীদের মুক্তি সহ পূর্বের চুক্তির শর্তাবলী সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত তারা আর আলোচনায় অংশ নেবে না। অন্যদিকে, কঙ্গো সরকার মনে করে যে বন্দীদের মুক্তি একটি আলোচনার বিষয়, পূর্বশর্ত নয়। এই মতপার্থক্য শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এই চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যর্থতা শান্তি প্রক্রিয়ার ভঙ্গুরতা তুলে ধরেছে। এম২৩-এর সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং কঙ্গো সরকারের পূর্বশর্ত নিয়ে অনমনীয় মনোভাব উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থার অভাব নির্দেশ করে।
চলমান সহিংসতা এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, এই অচলাবস্থা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা এবং মানবিক সংকটের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে। এই ব্যর্থতা বর্তমান মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার কার্যকারিতা এবং সকল পক্ষের শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রকৃত ইচ্ছা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। এই পরিস্থিতি পূর্ব ডিআরসি-তে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি অর্জনের পথে একটি বড় বাধা সৃষ্টি করেছে।