আগামী ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে বেইজিংয়ের তিয়ানানমেন স্কোয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে উপস্থিত থাকবেন। এই অংশগ্রহণ চীন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই কুচকাওয়াজে চীনের অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম, যেমন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, স্টিলথ বিমান এবং আন্ডারওয়াটার ড্রোন প্রদর্শন করা হবে। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের প্রধান দেশগুলোর কোনো নেতা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না, যা বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি প্রতিফলন। কিম জং উনের এই সফরটি ২০১৯ সালের পর তার প্রথম চীন সফর হবে, যা দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে। পুতিন এবং কিমের উপস্থিতি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানটি কেবল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির স্মরণে নয়, বরং এটি চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার প্রভাব বিস্তারের একটি প্রদর্শনীও বটে।
বিভিন্ন দেশের নেতাদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট লুওং কুওং, সিঙ্গাপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী গান কিম ইয়ং, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না।
এই সামরিক কুচকাওয়াজ চীনের সামরিক আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরবে। এতে নতুন প্রজন্মের ট্যাঙ্ক, বিমানবাহী রণতরী, ফাইটার জেট এবং ভূমি, সমুদ্র ও আকাশপথে ব্যবহৃত কৌশলগত অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শিত হবে। বিশেষ করে, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং উন্নত ড্রোন প্রযুক্তি প্রদর্শন চীনের সামরিক সক্ষমতাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে। এই আয়োজনটি চীনের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে দেশটির অঙ্গীকারকেও প্রতিফলিত করবে।