আমেরিকা ইউক্রেনকে ৩,৩৫০টি এক্সটেন্ডেড-রেঞ্জ অ্যাটাক মিউনিশন (ERAM) মিসাইল সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে। প্রায় ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই মিসাইলগুলি ইউক্রেনে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সরবরাহটি ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি বৃহত্তর সামরিক সহায়তা প্যাকেজের অংশ, যার অর্থায়নে ইউরোপীয় দেশগুলির উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
তবে, পেন্টাগন এই দীর্ঘ-পাল্লার আমেরিকান-নির্মিত অস্ত্রগুলির ব্যবহারে একটি পর্যালোচনা প্রক্রিয়া চালু করেছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এই একই ব্যবস্থা পূর্বে ATACMS মিসাইলগুলির রাশিয়ার ভূখণ্ডে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়েছিল। ERAM মিসাইলগুলি ২৪০ থেকে ৪৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। এগুলি সাশ্রয়ী এবং দ্রুত উৎপাদনযোগ্য অস্ত্র হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।
এই মিসাইলগুলির অনুমোদন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আলাস্কায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর আসে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ নিয়ে ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং শান্তি চুক্তি স্থাপনের তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় তিনি এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে ইউক্রেন যদি রাশিয়ার অভ্যন্তরে আঘাত হানতে না পারে তবে তাদের "জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই"। তিনি পূর্ববর্তী প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেছেন যে তারা কেবল ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাকে সক্ষম করেছে, কিন্তু পাল্টা আক্রমণের ক্ষমতা দেয়নি।
পেন্টাগনের এই পর্যালোচনা প্রক্রিয়াটি ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো ক্রুজ মিসাইলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, কারণ এটি আমেরিকান টার্গেটিং ডেটার উপর নির্ভরশীল। এই ব্যবস্থাটি ইউক্রেনের দীর্ঘ-পাল্লার অস্ত্র ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে, যা হোয়াইট হাউসের রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। আমেরিকার মোট সামরিক সহায়তা, যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে, তা ৬৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই নতুন ERAM মিসাইলগুলির সংযোজন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে, তবে রাশিয়ার ভূখণ্ডে তাদের ব্যবহারের উপর আরোপিত বিধিনিষেধ যুদ্ধের গতিপথ এবং এর কৌশলগত ফলাফলের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ইউক্রেনকে সহায়তা করার জটিল ভারসাম্য এবং কৌশলগত বিবেচনার একটি চিত্র তুলে ধরে।