মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি রুশ তেল ক্রয় বন্ধ করার বিষয়ে মন্তব্য করার পর, ভারত তার আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংগ্রহের কৌশল সম্পর্কে নিজস্ব অবস্থান পুনরায় দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করেছে। নয়া দিল্লি স্পষ্ট করেছে যে এই নীতি সম্পূর্ণরূপে বাজারের পরিস্থিতি এবং দেশের ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন, ভারতের আমদানি নীতি কেবল জাতীয় স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, স্থিতিশীল জ্বালানির দাম এবং সুরক্ষিত সরবরাহ নিশ্চিত করাই হলো ভারতের জ্বালানি নীতির দুটি প্রধান উদ্দেশ্য। এই ধারাবাহিক অবস্থানটি বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য জ্বালানির উৎসকে বিস্তৃত ও বৈচিত্র্যময় করার প্রতি অঙ্গীকারকে তুলে ধরে। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি অবিলম্বে বন্ধ করার আশ্বাস দিয়েছেন, মুখপাত্র সরাসরি সেই দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
রুশ তেল আমদানির বিষয়টি বর্তমানে কূটনৈতিক আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে, বিশেষত ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের উপর শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করার পর। যদিও কিছু সূত্র ইঙ্গিত দেয় যে রাষ্ট্র-পরিচালিত শোধনাগারগুলি সম্প্রতি রুশ জ্বালানি ক্রয় কমিয়েছে, তবে এই বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন যে সম্পূর্ণ এবং তাৎক্ষণিক বিরতি অসম্ভব।
ঐতিহাসিকভাবে, রাশিয়া ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি সরবরাহকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক নজরদারির আগে, ভারত তার অপরিশোধিত তেলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রাশিয়া থেকে সংগ্রহ করত। এই সরবরাহ শৃঙ্খলের জটিলতা এবং ভারতের বিশাল জ্বালানি চাহিদা বিবেচনা করে, রাতারাতি সরবরাহ বন্ধ করা অর্থনৈতিকভাবে কঠিন।
একই সময়ে, নয়া দিল্লি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে জ্বালানি সহযোগিতা গভীর করার জন্য চলমান আলোচনার ওপর জোর দিয়েছে। ভারত বহু বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করছে এবং গত এক দশকে এই ক্ষেত্রে স্থির অগ্রগতিও হয়েছে। বাহ্যিক কূটনৈতিক চাপ সামলে এই কৌশলগত বৈচিত্র্য সাধনের প্রচেষ্টা বিশ্বব্যাপী অস্থির পণ্য বাজারে জ্বালানি নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক গতিপথ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় জটিল ভারসাম্য রক্ষার চিত্র তুলে ধরে।