ব্লু অরিজিন, ২০২৫ সালের ৮ই অক্টোবর তাদের নিউ শেপার্ড রকেটের মাধ্যমে সফলভাবে পঞ্চদশ মানববাহী সাব-অরবিটাল অভিযান সম্পন্ন করেছে। এই অভিযান, যা এনএস-৩৬ (NS-36) নামে পরিচিত, মহাকাশ পর্যটন ক্ষেত্রে কোম্পানির চলমান প্রচেষ্টার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। এই উৎক্ষেপণটি পশ্চিম টেক্সাসের নিজস্ব উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে সম্পন্ন হয়।
স্বয়ংক্রিয়, পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট-ক্যাপসুল ব্যবস্থার এই ৩৬তম সামগ্রিক ফ্লাইটে, যা এখন পর্যন্ত ৮৬ জন মানুষকে মহাকাশে নিয়ে গেছে, মহাকাশযানটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মহাকাশের সীমা কার্মান লাইন অতিক্রম করে এবং প্রায় ১০৬ কিলোমিটারের সর্বোচ্চ উচ্চতা স্পর্শ করে। এই যাত্রার সম্পূর্ণ সময়কাল ছিল উৎক্ষেপণ থেকে প্যারাসুট অবতরণ পর্যন্ত প্রায় দশ মিনিট। উৎক্ষেপণের পরপরই বুস্টারটি সফলভাবে উল্লম্ব অবতরণ সম্পন্ন করে। ক্যাপসুলটির নাম ছিল আরএসএস ফার্স্ট স্টেপ (RSS First Step)।
এই ফ্লাইটে ছয়জন যাত্রী মহাকাশের প্রান্তরে যাত্রা করেন, যা মানব অনুসন্ধানের এক অবিচল মনোভাবের সাক্ষ্য বহন করে। অভিযাত্রীদের মধ্যে ছিলেন বায়োটেক কোম্পানির চেয়ারম্যান উইল লুইস, ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানির সিইও অ্যারন নিউম্যান, প্রকৌশলী ডানা কারাগুসোভা, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা জেফ এলগিন, এবং পদার্থবিদ ভিটালি ওস্ত্রোভস্কি। এছাড়াও, এই দলে ছিলেন পুনরাবৃত্ত গ্রাহক ক্লিন্ট কেলি III, যিনি পূর্বে এনএস-২২ মিশনেও মহাকাশ ভ্রমণ করেছিলেন।
ব্লু অরিজিন আগামী দুই বছরের মধ্যে নিউ শেপার্ডের উড্ডয়নের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে, যার লক্ষ্য হলো প্রতি সপ্তাহে একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা। এই বর্ধিত সময়সূচি কার্যকর করার জন্য কোম্পানি তাদের বহরে আরও তিনটি নতুন নিউ শেপার্ড যান যুক্ত করতে চলেছে। পরিচালন ব্যয় হ্রাস এবং দ্রুত টার্নঅ্যারাউন্ড সময়ের জন্য তারা বিই-৩ (BE-3) ইঞ্জিনের আধুনিকীকরণ নিয়েও গবেষণা করছে। এই দ্রুত গতির উড়ানের পরিকল্পনাকে সমর্থন জানাতে, ব্লু অরিজিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও নতুন উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
এই ধরনের অভিযানগুলি মানবজাতির অনুসন্ধিৎসু চেতনার প্রতিচ্ছবি, যা আমাদের সম্মিলিত সম্ভাবনাকে প্রসারিত করার সুযোগ এনে দেয় এবং মহাকাশ যাত্রার ক্ষেত্রে এক নতুন পথের উন্মোচন করে।