স্যাটেলাইট সংযোগ: ২০৩৪ সালের মধ্যে ডেটা পরিষেবার আধিপত্য, বাংলাদেশ পেল স্টারলিংক লাইসেন্স

সম্পাদনা করেছেন: Tetiana Martynovska 17

স্যাটেলাইট যোগাযোগ শিল্প এক বড় ধরনের রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে আগামী দশকে ডেটা পরিষেবাগুলির প্রবৃদ্ধি তিনগুণ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। নোভা স্পেসের স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটি অ্যান্ড ভিডিও মার্কেট রিপোর্টের ৩২তম সংস্করণ অনুযায়ী, ২০২৩ সাল নাগাদ রাজস্বের দিক থেকে ডেটা অ্যাপ্লিকেশনগুলি ভিডিও পরিষেবাগুলিকে ছাড়িয়ে যাবে। এই পরিবর্তনটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, তথ্যের প্রবাহ এখন যোগাযোগের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে।

এই প্রবণতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান হলো, ২০২৪ সালে ডেটার অংশ ছিল ২১%, যা ২০৩৪ সালের মধ্যে ৫৫% এ পৌঁছানোর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই যুগান্তকারী পরিবর্তন মূলত নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (NGSO) কনস্টেলেশনগুলির দ্রুত স্থাপনা, সক্ষমতার মূল্য হ্রাস এবং সকল ডেটা বিভাগে ক্রমবর্ধমান চাহিদার দ্বারা চালিত হচ্ছে। ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে মোট সক্ষমতা সরবরাহ ৩.৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১০৫ টিবিপিএস-এ পৌঁছেছে, যার মধ্যে NGSO সিস্টেমগুলি, বিশেষত স্টারলিংকের মতো উদ্যোগের কারণে, এই সরবরাহের ৯৫% বহন করছে। এলন মাস্কের স্টারলিংক প্রকল্প, যা পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে (LEO) হাজার হাজার স্যাটেলাইট ব্যবহার করে, এই দ্রুত প্রসারে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে, যা দুর্গম অঞ্চলেও উচ্চ-গতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিচ্ছে।

NGSO-এর উত্থানের ফলে ঐতিহ্যবাহী জিওস্টেশনারি অরবিট (GEO) স্যাটেলাইটের অর্ডার হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে অপারেটররা ছোট এবং আঞ্চলিকভাবে কেন্দ্রীভূত স্যাটেলাইটের দিকে ঝুঁকছেন। প্রতিযোগিতা বজায় রাখার কৌশল হিসেবে ঐতিহ্যবাহী জিইও অপারেটররাও এখন তাদের সিস্টেমে NGSO সক্ষমতা যুক্ত করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই সমন্বয় ভবিষ্যতের স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে। সামুদ্রিক খাতে এই পরিবর্তন আরও স্পষ্ট, যেখানে ২০৩৪ সালের মধ্যে NGSO সমাধানগুলি বাজারের ৯৭% অংশ দখল করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলস্বরূপ, আগামী দশ বছরে ব্যান্ডউইথের চাহিদা সাতগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালের ২৮৬ জিবিপিএস থেকে বেড়ে ২ টিবিপিএস হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

এছাড়াও, ডাইরেক্ট-টু-ডিভাইস (D2D) স্যাটেলাইট সংযোগের বাজারও দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে, যা ২০৩৩ সালের মধ্যে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃদ্ধির ভিত্তি হলো প্রযুক্তিগত উন্নতি এবং স্যাটেলাইট-সামঞ্জস্যপূর্ণ স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা, যার ফলে ২০৩৩ সালের মধ্যে মাসিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪২৫ মিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ধরনের সংযোগ প্রচলিত অবকাঠামো দুর্বল এমন স্থানেও যোগাযোগের পথ সুগম করছে।

এই সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে, স্যাটেলাইট যোগাযোগ বাজার ডেটা পরিষেবার নেতৃত্বে বিশাল প্রবৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত। এই প্রেক্ষাপটে, শ্রীলঙ্কার পর বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে স্টারলিংকের মতো বৈশ্বিক NGSO সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স অনুমোদন করেছে, যা নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ নিশ্চিত করার একটি দৃঢ় পদক্ষেপ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC) স্টারলিংক সার্ভিসেস বাংলাদেশ লিমিটেডকে নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট অপারেটর লাইসেন্স এবং রেডিও কমিউনিকেশন অপারেটর লাইসেন্স প্রদান করেছে, যা উভয়ই ১০ বছরের জন্য বৈধ। এই পদক্ষেপ দেশের ডিজিটাল অগ্রগতিতে সহায়ক হবে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করবে।

উৎসসমূহ

  • SpaceNews

  • Satellite Connectivity and Video Market - Novaspace - Market Intelligence Hub

  • The Starlink effect: NGSO services to dominate maritime satellite communications market

  • Direct-to-Device Satellite Services Drive the Next Wave of Global Connectivity

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।

স্যাটেলাইট সংযোগ: ২০৩৪ সালের মধ্যে ডেটা পর... | Gaya One