অ্যাস্ট্রোবটিকের গ্রিফিন-১ চন্দ্রযান এবং অ্যাস্ট্রোল্যাবের ফ্লিপ (FLIP) রোভারকে ২০২৫ সালের শেষ ভাগে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পাঠানোর জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। এই যৌথ অভিযানটি নাসার ভিআইপিইআর (VIPER) রোভার প্রকল্প বাতিলের পরেই চূড়ান্ত রূপ নেয়, যার ফলে অ্যাস্ট্রোবটিককে গ্রিফিন-১ এর উদ্দেশ্য পুনর্বিন্যাস করতে হয়। গ্রিফিন-১ ল্যান্ডারটি মূলত ভিআইপিইআর বহনের জন্য তৈরি হলেও, প্রকল্পটি বাতিল হওয়ায় এটি এখন একটি বৃহৎ ল্যান্ডার প্রদর্শনী ফ্লাইট হিসেবে কাজ করছে, যা দক্ষিণ মেরুতে ভিআইপিইআর এর অনুরূপ ভর বহন করবে।
ফ্লিপ রোভারের মূল লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতের চন্দ্র অনুসন্ধানের জন্য অপরিহার্য প্রযুক্তিগুলির কার্যকারিতা যাচাই করা। এই যাচাইকৃত প্রযুক্তিগুলির মধ্যে রয়েছে পূর্ণ আকারের ব্যাটারি, চাকা, অ্যাভিওনিক্স সিস্টেম, সেন্সর এবং অপারেশনাল সফটওয়্যার। ফ্লিপ রোভারটি অ্যাস্ট্রোল্যাবের বৃহত্তর ফ্লেক্সিবল লজিস্টিকস অ্যান্ড এক্সপ্লোরেশন (FLEX) রোভারের জন্য একটি উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যা আর্টেমিস কর্মসূচির অধীনে নভোচারীদের জন্য ব্যবহৃত হবে। ফ্লিপ রোভারটি ভিআইপিইআর এর জন্য নির্ধারিত খামের মধ্যে এবং ৪৬০ কেজি উৎক্ষেপণ ভরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে নকশা করা হয়েছে। অ্যাস্ট্রোল্যাব এই মিশনের মাধ্যমে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর চরম তাপমাত্রা এবং অনন্য ভূখণ্ডে তাদের হাইপার-ডিফর্মেবল এয়ারলেস টায়ার এবং ব্যাটারির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করছে।
এই মিশনের একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন হলো, ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে অ্যাস্ট্রোল্যাব প্রাকৃতিক সম্পদ কোম্পানি ইন্টারলুনের সাথে অংশীদারিত্ব করে ফ্লিপ রোভারে একটি মাল্টিস্পেকট্রাল ক্যামেরা যুক্ত করে। এই ক্যামেরাটি নাসার অ্যামেস রিসার্চ সেন্টারের সহায়তায় তৈরি, যা চন্দ্র রেগোলিথের মধ্যে হিলিয়াম-৩ এর ঘনত্ব পরিমাপ করবে। ইন্টারলুন চাঁদের রেগোলিথ থেকে হিলিয়াম-৩ আহরণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, যা কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, চিকিৎসা ইমেজিং এবং ফিউশন শক্তির মতো ক্ষেত্রে মূল্যবান হতে পারে। এই কোম্পানিটি ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি থেকে হিলিয়াম-৩ কেনার চুক্তিও করেছে।
ফ্লিপ রোভারটি চন্দ্র ধূলিকণার ঝুঁকি প্রশমনের কৌশলও পরীক্ষা করবে, যেমন সৌর অ্যারে এবং রেডিয়েটরের সুরক্ষামূলক আবরণ এবং চাকার অ্যাকচুয়েটরে নতুন ধূলিকণা সিলিং কৌশল প্রয়োগ। এই অভিযানটি বেসরকারি খাতের চন্দ্র অনুসন্ধানে ক্রমবর্ধমান ও অপরিহার্য ভূমিকা তুলে ধরে, যা মানবজাতির ভবিষ্যতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে।
