ইনসব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা কোয়ান্টাম নেটওয়ার্কিং-এর ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক অর্জন করেছেন। তারা পৃথক ফোটনের সাথে দশটি স্বতন্ত্র কিউবিটকে সফলভাবে এনট্যাঙ্গল করেছেন, যা কোয়ান্টাম প্রসেসরগুলির আন্তঃসংযোগের জন্য একটি পরিমাপযোগ্য পদ্ধতির উন্মোচন করেছে। এই যুগান্তকারী গবেষণাটি ২১শে আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ফিজিক্যাল রিভিউ লেটার্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
বেন ল্যানিয়নের নেতৃত্বে দলটি ইনসব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রোটোটাইপ কোয়ান্টাম কম্পিউটারে দশটি ক্যালসিয়াম আয়ন ব্যবহার করে এই পরীক্ষাটি সম্পন্ন করে। বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, প্রতিটি আয়নকে একটি অপটিক্যাল ক্যাভিটিতে পরিচালিত করা হয়েছিল। সেখানে, একটি লেজার পালস প্রতিটি আয়নের কোয়ান্টাম অবস্থার সাথে ফোটনের পোলারাইজেশনকে এনট্যাঙ্গল করে। এর ফলে প্রতিটি আয়ন-কিউবিটের সাথে যুক্ত একটি ফোটন তৈরি হয়, যা কোয়ান্টাম তথ্যের একটি ধারাবাহিক প্রবাহ তৈরি করে। এই পদ্ধতিতে গড়ে ৯২% আয়ন-ফোটন এনট্যাঙ্গলমেন্ট বিশ্বস্ততা অর্জিত হয়েছে, যা এই কৌশলের নির্ভরযোগ্যতা প্রমাণ করে।
এই প্রযুক্তির পরিমাপযোগ্যতা একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা, কারণ এটি শত শত আয়ন সহ বৃহত্তর রেজিস্টারে সম্প্রসারণের সুযোগ দেয়। এই ক্ষমতা বিভিন্ন স্থানে কোয়ান্টাম প্রসেসরগুলিকে সংযুক্ত করার জন্য অপরিহার্য। এই প্রযুক্তিটি অপটিক্যাল অ্যাটমিক ক্লকগুলির কর্মক্ষমতা উন্নত করার সম্ভাবনাও রাখে, যা তাদের চরম নির্ভুলতার জন্য পরিচিত। কোয়ান্টাম নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই ঘড়িগুলিকে সংযুক্ত করা একটি বিশ্বব্যাপী সময়-রক্ষণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারে যা অভূতপূর্ব নির্ভুলতা প্রদান করবে। এই নির্ভুলতা জিপিএস নেভিগেশন এবং টেলিযোগাযোগের মতো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
এই গবেষণা প্রকল্পে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অস্ট্রিয়ান সায়েন্স ফান্ড (FWF) সহ বিভিন্ন সংস্থা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। এই অগ্রগতি ভবিষ্যতের কোয়ান্টাম প্রযুক্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।