BMW এবং Toyota তাদের যৌথ উদ্যোগে পরবর্তী প্রজন্মের হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল সিস্টেম তৈরি করছে, যা ২০২৮ সালে BMW-এর প্রথম সিরিজ-উৎপাদিত ফুয়েল সেল ইলেকট্রিক ভেহিকল (FCEV) হিসেবে বাজারে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই অংশীদারিত্বের মূল উদ্দেশ্য হল নতুন ফুয়েল সেল প্রযুক্তিকে BMW-এর বর্তমান গাড়ির মডেলগুলিতে অন্তর্ভুক্ত করে হাইড্রোজেন চালিত পরিবহনের অগ্রগতি সাধন করা।
এই নতুন FCEV-তে BMW এবং Toyota দ্বারা সহ-উন্নত তৃতীয় প্রজন্মের ফুয়েল সেল সিস্টেম ব্যবহার করা হবে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে এই সিস্টেমটি বর্তমান মডেলগুলির তুলনায় ২৫% ছোট হবে, যা উৎপাদনকারী গাড়িগুলিতে সহজে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে এবং দক্ষতার সাথে কোনো আপস করবে না। এছাড়াও, নতুন ফুয়েল সেল প্রযুক্তির উৎপাদন খরচ ৫০% কমানো এবং প্রতি কিলোগ্রাম হাইড্রোজেনে রেঞ্জ ২০% বৃদ্ধি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
BMW-এর iX5 Hydrogen পাইলট ফ্লিট, যা ২০২৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পরীক্ষামূলকভাবে চলছে, এই উন্নয়নের একটি পূর্বসূরী হিসেবে কাজ করছে। iX5 Hydrogen-এ একটি ফুয়েল সেল সিস্টেম রয়েছে যা ১২৫ কিলোওয়াট (১৭০ অশ্বশক্তি) শক্তি উৎপাদন করে এবং একটি ডেডিকেটেড ব্যাটারি সহকারে মোট ২৮৫ কিলোওয়াট (৪০১ অশ্বশক্তি) পর্যন্ত সম্মিলিত আউটপুট প্রদান করে। এই গাড়িটি বিভিন্ন জলবায়ু এবং ভূখণ্ডে তার কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে, যা হাইড্রোজেন চালিত পরিবহনের সম্ভাব্যতা তুলে ধরেছে।
BMW এবং Toyota-এর এই অংশীদারিত্ব স্বয়ংচালিত শিল্পে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল প্রযুক্তির গ্রহণকে উৎসাহিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা গ্রাহকদের জন্য একটি অতিরিক্ত শূন্য-নির্গমন পাওয়ারট্রেন বিকল্প সরবরাহ করবে। উভয় কোম্পানিই FCEV-এর ব্যাপক ব্যবহারের জন্য হাইড্রোজেন পরিকাঠামো বিকাশের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে।
BMW-এর Steyr প্ল্যান্টে ২০২৮ সাল থেকে এই নতুন ফুয়েল সেল সিস্টেমের উৎপাদন শুরু হবে। এই তৃতীয় প্রজন্মের সিস্টেমে পাওয়ার ডেনসিটি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুয়েল সেল সিস্টেমের আকার প্রায় ২৫% হ্রাস পেয়েছে, যা এটিকে আরও কমপ্যাক্ট করে তুলেছে। এটি BMW-এর প্রযুক্তি-মুক্ত পদ্ধতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে গ্রাহকদের বিভিন্ন ড্রাইভ সিস্টেমের বিকল্প সরবরাহ করা হয়। এই উন্নত সিস্টেমটি কেবল কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করবে না, বরং উৎপাদন খরচ কমাতেও সহায়ক হবে, যা হাইড্রোজেন চালিত গাড়িকে আরও সুলভ করে তুলবে।
BMW iX5 Hydrogen পাইলট ফ্লিট বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন জলবায়ু এবং ভূখণ্ডে পরীক্ষা করা হয়েছে, যা এই প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্যতা এবং কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মরুভূমিতে উচ্চ তাপমাত্রা এবং বালুকাময় পরিবেশে এর পরীক্ষাগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল, যেখানে এটি ৪৫°C পর্যন্ত তাপমাত্রায়ও তার কর্মক্ষমতা বজায় রেখেছে। এই পরীক্ষাগুলি নিশ্চিত করে যে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল প্রযুক্তি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যবহারযোগ্য এবং এটি BMW-এর চালিকা গতিবিদ্যার মান বজায় রাখতে সক্ষম।
BMW এবং Toyota-এর এই যৌথ প্রচেষ্টা হাইড্রোজেন চালিত যানবাহনের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করছে। যদিও হাইড্রোজেন পরিকাঠামো এবং উৎপাদন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলি এখনও বিদ্যমান, এই ধরনের অংশীদারিত্বগুলি এই প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উভয় কোম্পানিই বিশ্বাস করে যে হাইড্রোজেন পরিবহন খাতের কার্বন নিঃসরণ কমাতে একটি অপরিহার্য বিকল্প হিসেবে কাজ করবে, বিশেষ করে যেখানে ব্যাটারি-ভিত্তিক বৈদ্যুতিক গাড়ির সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যেমন দীর্ঘ দূরত্বের পরিবহন এবং ভারী যানবাহন। এই প্রযুক্তিটি ২০২৮ সালের মধ্যে বাজারে আসার মাধ্যমে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে, যা পরিবেশবান্ধব পরিবহনের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।