ব্রিটিশ সঙ্গীতের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার মার্কারি প্রাইজ 2025-এর বিতরণী অনুষ্ঠানটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলো।
16 অক্টোবর 2025 তারিখে, এই জমকালো আয়োজনটি প্রথমবারের মতো লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী সীমানা পেরিয়ে নিউক্যাসলের ইউটিলিটা এরিনা-তে অনুষ্ঠিত হয়।
এই পদক্ষেপটি কেবল একটি স্থান পরিবর্তন ছিল না — এটি ব্রিটিশ সঙ্গীত দৃশ্যের বিকেন্দ্রীকরণ এবং আঞ্চলিক বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দেওয়ার এক সুস্পষ্ট ঘোষণা।
মার্কারি প্রাইজকে নিউক্যাসলে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তটি উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এই অঞ্চলটি Dire Straits-এর মতো কিংবদন্তি ব্যান্ড থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের Sam Fender-এর মতো শিল্পীদের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ সঙ্গীত ঐতিহ্য গড়ে তুলেছে।
এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে ব্রিটিশ সঙ্গীতের প্রাণকেন্দ্র কেবল লন্ডনেই সীমাবদ্ধ নয়।
নিউক্যাসলের মঞ্চে সমসাময়িক ব্রিটিশ সঙ্গীতের দিকনির্দেশক শিল্পীরা একত্রিত হয়েছিলেন — Sam Fender, FKA twigs, Fontaines D.C., PinkPantheress, Pulp, CMAT এবং Wolf Alice-এর মতো তারকারা।
এই সন্ধ্যাটি বিভিন্ন প্রজন্মের শিল্পীদের মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল — যেখানে প্রতিষ্ঠিত কিংবদন্তীরা নতুন প্রজন্মের প্রতিভাবান শিল্পীদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছিলেন, যারা বিকল্প এবং পপ ঘরানার ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছেন।
ইউটিলিটা এরিনার হলটি ছিল প্রাণবন্ত পারফরম্যান্সে মুখরিত।
FKA twigs তার Heaven or Whatever অ্যালবাম থেকে একটি স্বপ্নময় পরিবেশনা দিয়ে দর্শকদের মোহিত করেন,
Fontaines D.C.-এর Romance গানে ধ্বনিত হয়েছিল পোস্ট-পাঙ্কের উচ্ছ্বাস,
আর স্থানীয় তারকা Sam Fender নিজের Talk To You গানটির হৃদয়স্পর্শী পরিবেশনা দেন, যা সেদিনের সন্ধ্যার আবেগঘন মুহূর্তে রূপ নেয়।
সবশেষে, বহু প্রতীক্ষিত ‘বর্ষসেরা অ্যালবাম’ পুরস্কারটি জিতে নেন স্যাম ফেন্ডার, তার প্রশংসিত অ্যালবাম People Watching-এর জন্য।
বিচারক প্যানেল এই কাজটিকে বিশেষভাবে প্রশংসা করে — এটিকে তারা আখ্যা দেন “অসাধারণ আবেগের সততা এবং সময়ের সঠিক স্পন্দনকে সঙ্গীতের মাধ্যমে ধারণ করার ক্ষমতা”।
পুরস্কার গ্রহণের সময় স্যাম ফেন্ডার বলেন:
“সঙ্গীতকে সবচেয়ে জোরে কথা বলতে হবে না — বরং সত্যি কথা বলতে হবে।”
তার এই উক্তি পুরো অনুষ্ঠানের প্রতিধ্বনি হয়ে ওঠে — যেখানে ব্রিটিশ সঙ্গীত আবারও নিজের আত্মাকে আবিষ্কার করেছে।
মার্কারি প্রাইজ 2025 প্রমাণ করেছে যে ব্রিটিশ সঙ্গীত জগত এখন পরিবর্তনের হাওয়ায় দুলছে।
এখানে ঐতিহ্য ও নতুনত্ব একে-অপরকে আলিঙ্গন করছে,
আর সঙ্গীত আজও সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও অনুভূতির আয়না হয়ে রয়ে গেছে — যা ভবিষ্যতের জন্য খুলে দেয় এক নতুন সুরের দিগন্ত।