প্রাক্তন রাজকীয় বাটলার গ্রান্ট হ্যারল্ড ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যেকার সম্পর্ক, বিশেষ করে প্রিন্স হ্যারি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যেকার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রিন্স হ্যারির দাবির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। হ্যারল্ড তাঁর সাম্প্রতিক এক লেখায় উল্লেখ করেছেন যে, তিনি প্রিন্স হ্যারি, রাজা চার্লস, রানী ক্যামিলা এবং প্রিন্স উইলিয়ামের মধ্যে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি তাঁদের একসঙ্গে খাবার খাওয়া, পানীয় উপভোগ করা এবং পার্টিতে অংশগ্রহণের ঘটনাগুলোকে পারিবারিক সম্প্রীতির প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
হ্যারল্ডের এই পর্যবেক্ষণ প্রিন্স হ্যারির ২০২৩ সালে প্রকাশিত স্মৃতিকথা 'স্পেয়ার'-এ বর্ণিত তথ্যের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। 'স্পেয়ার' বইটিতে ডিউক অফ সাসেক্স তাঁর ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে ২০১৯ সালে এক শারীরিক সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি একটি উত্তপ্ত বিতর্কের বর্ণনা দিয়েছেন, যার ফলে উইলিয়াম তাঁকে ধরে ফেলে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন। সাত বছর ধরে রাজপরিবারের সেবা করা হ্যারল্ড আরও বলেছেন যে, রাজা চার্লস পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আনন্দ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিলেন।
এই ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যকার সম্পর্কের একটি জটিল চিত্র তুলে ধরে। হ্যারল্ডের পর্যবেক্ষণ প্রিন্স হ্যারির ব্যক্তিগত বিবরণের চেয়ে রাজপরিবারকে একটি অধিকতর ঐক্যবদ্ধ গোষ্ঠী হিসেবে উপস্থাপন করে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে রাজপরিবারের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা চলছিল, যার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রিন্স উইলিয়াম এবং প্রিন্স হ্যারির মধ্যেকার দূরত্ব। এই সময়েই তাঁদের পৃথক রাজকীয় দপ্তর প্রতিষ্ঠার ঘোষণা আসে। যদিও হ্যারল্ড তাঁর সময়ে রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যে এমন কোনো বিভেদ বা বিদ্বেষের আভাস পাননি। বরং তিনি দেখেছেন যে, প্রিন্স হ্যারি তাঁর ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের তৎকালীন প্রেমিকা কেট মিডলটনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতেন, যেমন একসঙ্গে কেনাকাটা বা পাবে যাওয়া। এই ঘটনাগুলো রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যেকার ইতিবাচক সম্পর্ককেই নির্দেশ করে।
হ্যারল্ডের মতে, রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যেকার এই সুসম্পর্ক প্রিন্স হ্যারির স্মৃতিকথায় বর্ণিত পরিস্থিতির সঙ্গে একেবারেই মেলে না। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, তিনি নিজে তাঁদের একসঙ্গে ডিনার, ড্রিঙ্কস এবং পার্টিতে অংশগ্রহণ করতে দেখেছেন, যা তাদের মধ্যেকার সুসম্পর্কেরই পরিচায়ক। তাঁর এই বক্তব্য প্রিন্স হ্যারির দাবিকৃত পারিবারিক কলহের চিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।