নেটফ্লিক্সের বিশেষ উপস্থাপনা "ডাইনিং উইথ দ্য কাপুরস": রন্ধন ঐতিহ্য ও বলিউডের উত্তরাধিকার
সম্পাদনা করেছেন: Olga Samsonova
স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে সম্প্রতি প্রিমিয়ার হয়েছে তথ্যচিত্র প্রকল্প "ডাইনিং উইথ দ্য কাপুরস" (Dining with the Kapoors)। এটি বলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী রাজবংশ, কিংবদন্তি কাপুর পরিবারের রন্ধন ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে তৈরি। এই অনুষ্ঠানটি দর্শকদের সুযোগ করে দেয় দেখতে যে কীভাবে এই চলচ্চিত্র পরিবারের একাধিক প্রজন্ম একসঙ্গে রান্নার আয়োজন করে, যা তাদের জীবন ও ঐতিহ্যের একতা বজায় রাখতে খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে তুলে ধরে। খাদ্য শুধু তাদের ক্ষুধা নিবারণ করে না, বরং এটি তাদের পারিবারিক বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে কাজ করে।
আরমান জৈন এই প্রকল্পটি তৈরি করেছেন এবং পরিচালনা করেছেন স্মৃতি মুন্ধরা, যিনি "ইন্ডিয়ান ম্যাচমেকিং" এবং "দ্য রোমান্টিকস"-এর মতো জনপ্রিয় কাজের জন্য সুপরিচিত। এই তথ্যচিত্রটি মুক্তি পেয়েছে ২০২৫ সালের ২১ নভেম্বর। এই তারিখটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি পরিবারের পিতৃতুল্য অভিনেতা ও পরিচালক রাজ কাপুরের শতবর্ষের সঙ্গে যুক্ত, ভারতীয় চলচ্চিত্রে যার প্রভাব আজও অত্যন্ত গভীর। তথ্যচিত্রটি "ফ্লাই-অন-দ্য-ওয়াল" শৈলীতে চিত্রায়িত হয়েছে, যা "খানদান কাপুরস"-এর বহু দশকের হাসি, নস্টালজিক স্মৃতিচারণ এবং স্বতঃস্ফূর্ত কথোপকথনের মতো খাঁটি মুহূর্তগুলিকে নিপুণভাবে ধারণ করেছে।
এই বিশেষ পর্বে অংশ নিয়েছেন রণধীর কাপুর, নীতু কাপুর, রণবীর কাপুর, কারিনা কাপুর খান এবং কারিশমা কাপুর। এছাড়াও সাইফ আলি খান এবং ঋদ্ধিমা কাপুর সাহনিও এতে উপস্থিত ছিলেন, যা তাদের পর্দার বাইরের পারিবারিক সংহতিকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। নির্মাতা আরমান জৈন উল্লেখ করেছেন যে এই প্রকল্পটি হল "নানাজি" (রাজ কাপুর)-এর প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সেই অটুট বন্ধন উদযাপনের একটি মাধ্যম, যেখানে খাদ্য সর্বদা কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে। এই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে দর্শক জানতে পারেন কীভাবে রান্না ও ভোজন তাদের পারিবারিক ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
কাপুরদের রন্ধনশৈলীর প্রতি অনুরাগ তাদের উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের পেশোয়ারের শিকড় এবং ভালো খাবারের প্রতি তাদের সুপরিচিত ভালোবাসাকে প্রতিফলিত করে। পরিবারের সদস্যরা এর আগেও বলেছেন যে তারা মূলত 'খাদ্যরসিকদের পরিবার', এবং তাদের আলোচনা প্রায়শই বিভিন্ন পদ ও রেস্তোরাঁকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। যদিও এই পরিবারটি মাটনসহ আমিষ খাবারের প্রতি তাদের ভালোবাসার জন্য পরিচিত, তবুও তাদের পছন্দের তালিকায় বৈচিত্র্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, নিরামিষ পদগুলির মধ্যে তারা পালং পনির উপভোগ করেন। তবে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, পরিবারের প্রধান রাজ কাপুরের প্রিয় খাবার ছিল ইয়াকনি পোলাও। তাদের এই খাদ্যপ্রেম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হয়েছে।
পরিচালক স্মৃতি মুন্ধরা কেবল পৃষ্ঠতলের ইতিহাস নয়, বরং খাবারের টেবিলের চারপাশের সামগ্রিক পরিবেশটিকেও ক্যামেরাবন্দী করার চেষ্টা করেছেন। ট্রেলারে কারিনা কাপুর পরিবারটিকে "মজার, ঘনিষ্ঠ এবং প্রেমময়" বলে বর্ণনা করেছেন, যেখানে খাদ্য হাসি-ঠাট্টা ও স্মৃতি বিনিময়ের পটভূমি হিসেবে কাজ করে। আবাশ্যাক মিডিয়া (Aavashyak Media)-এর সহযোগিতায় নির্মিত এই প্রকল্পটি প্রায় এক শতাব্দী ধরে এই রাজবংশকে রূপদানকারী ঐতিহ্যগুলির গভীরে প্রবেশ করার সুযোগ দেয়। এটি খাদ্য, পরিবার এবং সিনেমাটিক ঐতিহ্যের মধ্যেকার সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যা বলিউডের এই কিংবদন্তি পরিবারের ব্যক্তিগত জীবনযাত্রার একটি অন্তরঙ্গ চিত্র তুলে ধরে।
উৎসসমূহ
WION
Koimoi
NewsBytes
The Bridge Chronicle
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
