বর্তমানে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, আর এই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান্নাঘরে জায়গা করে নিয়েছে এয়ার ফ্রায়ার। এই অত্যাধুনিক যন্ত্রটি গরম বাতাস ব্যবহার করে খাবার তৈরি করে, যা প্রচলিত ডিপ ফ্রাইং পদ্ধতির তুলনায় অনেক কম তেল ব্যবহার করে। এর ফলে খাবারে ফ্যাটের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়, যা একে স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। গভীর তেলে ভাজার সঙ্গে তুলনা করলে, এয়ার ফ্রায়ারে তৈরি খাবার, যেমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ক্যালোরির দিক থেকে প্রায় অর্ধেক হয়।
আলু বা ময়দার মতো শ্বেতসারযুক্ত খাবার উচ্চ তাপে রান্না করলে অ্যাক্রিলামাইড নামক একটি সম্ভাব্য কার্সিনোজেনিক যৌগ তৈরি হতে পারে, যা এয়ার ফ্রায়ারের মাধ্যমে রান্না করলে এর পরিমাণ কমে আসে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, এয়ার ফ্রাইং পদ্ধতিতে চিকেন রান্না করলে ডিপ ফ্রাইংয়ের তুলনায় অ্যাক্রিলামাইড এবং পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন (PAHs) কম তৈরি হয়। এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করার সময় অ্যাভোকাডো তেল, সানফ্লাওয়ার তেল বা হালকা অলিভ অয়েলের মতো স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করা যেতে পারে, কারণ এই তেলগুলো উচ্চ তাপমাত্রায়ও স্থিতিশীল থাকে। তবে, স্বাস্থ্যকর রান্নার জন্য উপাদানের সঠিক নির্বাচন এবং প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, আলু বা অন্যান্য শ্বেতসারযুক্ত খাবার এয়ার ফ্রাই করার আগে ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রাখলে অ্যাক্রিলামাইড তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এটি খাবারের অতিরিক্ত স্টার্চ ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
এয়ার ফ্রায়ার কেবল স্বাস্থ্যকর রান্নার একটি উপায়ই নয়, এটি সময় সাশ্রয়ী এবং ব্যবহারেও সহজ। এর মাধ্যমে খাবার তৈরি করলে তা কম তেলে মচমচে হয় এবং পুষ্টিগুণও অনেকাংশে বজায় থাকে। তবে, যেকোনো রান্নার মতোই, এয়ার ফ্রায়ারে তৈরি খাবারেও পরিমিতিবোধ বজায় রাখা জরুরি। স্বাস্থ্যকর তেল নির্বাচন এবং সঠিক তাপমাত্রা ও সময় নিয়ন্ত্রণ করে এয়ার ফ্রায়ারকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ করে তোলা যেতে পারে।