ফ্যাশন জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো যখন বেলজিয়ামের প্রভাবশালী ডিজাইনার গ্লেন মার্টেনস এইচঅ্যান্ডএম-এর সাথে তাঁর বহু প্রতীক্ষিত সহযোগিতা প্রকাশ করলেন। এই উদ্যোগটি কেবল একটি পোশাক সংগ্রহ নয়, বরং পরিচিত দৈনন্দিন শৈলীকে এক নতুন, রূপান্তরযোগ্য মাত্রায় উন্নীত করার এক প্রচেষ্টা। মার্টেনস, যিনি বর্তমানে ডিজেল এবং মেসন মার্জিয়েলার সৃজনশীল পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি তাঁর নিজস্ব নামে এই বিশেষ সিরিজটি নিয়ে এসেছেন।
এই সংগ্রহটি মূলত এইচঅ্যান্ডএম-এর আর্কাইভ থেকে সেরা বিক্রিত মৌলিক পোশাক, যেমন ট্রেঞ্চ কোট, বোমার জ্যাকেট, শার্ট এবং ডেনিমকে ভিত্তি করে তৈরি। মার্টেনসের সৃজনশীলতার স্বাক্ষর বহন করে এই সাধারণ উপাদানগুলিতে আনা হয়েছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। তাঁর নকশার মূল বৈশিষ্ট্য হলো রূপান্তরযোগ্যতা এবং গ্রাহকের হাতে পোশাককে নতুন আকার দেওয়ার ক্ষমতা। এই সংগ্রহের অন্যতম আকর্ষণ হলো ফয়েল এবং অভ্যন্তরীণ তারের ব্যবহার, যা পরিধানকারীকে শার্টের কলার বা জ্যাকেটের কাঠামোকে নিজের ইচ্ছামতো ভাঁজ করে বা ভাস্কর্যের মতো আকার দিতে সাহায্য করে।
মার্টেনস তাঁর পূর্ববর্তী ব্র্যান্ড ওয়াই/প্রজেক্টের (Y/Project) কিছু আইকনিক উপাদানকেও এই সংগ্রহে সম্মান জানিয়েছেন। ওয়াই/প্রজেক্টের ১১ বছরের সৃজনশীল পরিচালক হিসেবে কাজ করার পর, ব্র্যান্ডটি বন্ধ হওয়ায়, মার্টেনস এই এইচঅ্যান্ডএম সংগ্রহটিকে সেই সৃজনশীলতার প্রতি এক 'শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি' হিসেবে দেখছেন। বিশেষত, তাঁর পরিচিত থাই-হাই বুট এবং কাঠামোগত নকশাগুলি এই নতুন সিরিজে স্থান পেয়েছে। এই সংগ্রহটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের চাহিদা মেটাতে পারে—মার্টেনসের মতে, এটি এমন পোশাকের এক বড় পরিবার যা দিনের বিভিন্ন মুহূর্তে মানিয়ে নিতে পারে।
এই শৈল্পিক যাত্রায় এইচঅ্যান্ডএম-এর সৃজনশীল উপদেষ্টা এবং মহিলাদের পোশাক বিভাগের প্রধান অ্যান-সোফি জোহানসন মার্টেনসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। তাঁরা উভয়েই এই প্রক্রিয়াটিকে আনন্দদায়ক বলে অভিহিত করেছেন। এই সংগ্রহের প্রচারে ব্রিটিশ সংস্কৃতির প্রতি মার্টেনসের আগ্রহ প্রতিফলিত হয়েছে, যেখানে প্রবীণ অভিনেতা রিচার্ড ই. গ্রান্ট এবং জোয়ানা লুমলিকে একটি 'স্টিরিওটিপিকাল ফ্যামিলি পোর্ট্রেট'-এর আদলে সাজানো হয়েছে। এই উদ্যোগটি প্রমাণ করে যে শৈল্পিক গভীরতা বজায় রেখেও সাশ্রয়ী মূল্যে উদ্ভাবনী নকশা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব, যা পরিচিতকে এক নতুন উপলব্ধির স্তরে উন্নীত করে।