১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে নাসার সোলার ডায়নামিকস অবজারভেটরি (SDO) সূর্যের বায়ুমণ্ডলে একটি বিশাল, প্রজাপতি-আকৃতির করোনা হোলের ছবি তুলেছে। এই গঠনটি প্রায় ৫ লক্ষ কিলোমিটার বিস্তৃত এবং বর্তমানে সৌর বায়ু প্রবাহ নির্গত করছে যা পৃথিবীর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই সৌর বায়ু প্রায় ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ নাগাদ পৃথিবীতে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় সৃষ্টি করতে পারে।
করোনা হোল হলো সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডলের শীতল, কম ঘনত্বের অঞ্চল, যেখান থেকে চৌম্বকীয় ক্ষেত্ররেখা মহাকাশে বিস্তৃত হয়। এই সৌর বায়ুর নির্গমন পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে মেরুজ্যোতি সৃষ্টি করে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ১৩ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সালের মধ্যে সক্রিয় থেকে জি১ (ক্ষুদ্র) ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা জি২ (মাঝারি) স্তরে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা উপগ্রহ পরিচালনা এবং পৃথিবীর প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার উপর সম্ভাব্য প্রভাবগুলি মূল্যায়ন করার জন্য পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
এসডিও প্রায় ৯৩ মিলিয়ন মাইল দূর থেকে সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করে চলেছে। ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত, সৌর বায়ু পৃথিবীর দিকে যাত্রা করছে। এই ঘটনাটি সূর্যের গতিশীল প্রকৃতি এবং মহাকাশের আবহাওয়ার উপর এর উল্লেখযোগ্য প্রভাবকে তুলে ধরে। পৃথিবীর পরিকাঠামোর উপর এই প্রভাবগুলি বোঝা এবং প্রশমিত করার জন্য অবিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়গুলি উপগ্রহের কার্যকারিতা এবং রেডিও যোগাযোগকে ব্যাহত করতে পারে। উচ্চ-শক্তির সৌর কণাগুলি উপগ্রহের ইলেকট্রনিক্সকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বা ডেটা নষ্ট করতে পারে। এই ধরনের ঘটনাগুলি জিপিএস (GPS) পরিষেবাগুলিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে অবস্থানের নির্ভুলতা কমে যেতে পারে। মহাকাশযানগুলিকেও অতিরিক্ত বিকিরণ থেকে রক্ষা করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়, কারণ এই কণাগুলি তাদের সৌর প্যানেল এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের ক্ষতি করতে পারে।
এই মহাজাগতিক ঘটনাগুলি কেবল প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার জন্যই নয়, বরং পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের উপরও প্রভাব ফেলে, যা মেরুজ্যোতির মতো সুন্দর দৃশ্য তৈরি করতে পারে।