একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, কানের আকুপাংচার টেনশন-টাইপ হেডেক (TTH) আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হতে পারে। এই গবেষণাটি BMC Complementary Medicine and Therapies জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি প্রায়শই এপিসোডিক টেনশন-টাইপ হেডেক (FETTH) রোগীদের উপর পরিচালিত হয়েছে।
গবেষণার ফলাফলগুলি ইঙ্গিত দেয় যে, কানের আকুপাংচার শুধুমাত্র মাথাব্যথার তীব্রতাই কমায় না, বরং উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা কমাতেও এবং মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বাড়াতেও সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা কানের আকুপাংচার নিয়েছেন, তাদের ভিজ্যুয়াল অ্যানালগ স্কেল (VAS) স্কোর উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এই স্কোরগুলি ২৪ ঘন্টা, ২ সপ্তাহ এবং ৪ সপ্তাহ পরে যথাক্রমে P < 0.001, P = 0.004 এবং P = 0.015 ছিল। এছাড়াও, মাথাব্যথার সূচক (headache index) ৪ সপ্তাহ পরে ৭ থেকে ৪-এ নেমে এসেছে (P = 0.016)।
হ্যামিল্টন অ্যাংজাইটি স্কেল (HAMA) এবং হ্যামিল্টন ডিপ্রেশন স্কেল (HAMD) স্কোরগুলিও কানের আকুপাংচার গ্রহণকারী গ্রুপে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহের ক্ষেত্রে, অ্যান্টেরিয়র সেরেব্রাল আর্টারি (ACA) এবং পোস্টেরিয়র সেরেব্রাল আর্টারি (PCA) এর রক্ত প্রবাহের গতিবেগ বৃদ্ধি পেয়েছে (P < 0.001)।
গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন জিন, এক্স., জু, জেড., গাও, টি., প্রমুখ। এই গবেষণায় ৮০ জন FETTH রোগীকে চারটি সপ্তাহে কানের আকুপাংচার বা শ্যা ম আকুপাংচার (sham acupuncture) দেওয়া হয়। ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফলাফলগুলি দেখায় যে, কানের আকুপাংচার গ্রহণকারী রোগীরা মাথাব্যথার তীব্রতা, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা থেকে মুক্তি পেয়েছেন এবং তাদের মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও, তারা মাথাব্যথার জন্য কম ঔষধ ব্যবহার করেছেন (P = 0.030)।
টেনশন-টাইপ হেডেক বিশ্বব্যাপী একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা মানুষের জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করে। প্রচলিত চিকিৎসার পাশাপাশি, কানের আকুপাংচারের মতো বিকল্প পদ্ধতিগুলি রোগীদের জন্য নতুন আশা জাগাচ্ছে। এই গবেষণাটি এই ঐতিহ্যবাহী চীনা পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রমাণ করে এবং ভবিষ্যতে মাথাব্যথা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হতে পারে।
এই গবেষণার ফলাফলগুলি এই ধারণাকে সমর্থন করে যে, কানের আকুপাংচার একটি নিরাপদ এবং কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হতে পারে, যা রোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করে। আরও গবেষণার মাধ্যমে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং কার্যকারিতা আরও ভালোভাবে বোঝা সম্ভব হবে।