জুলাই মাসে, ওয়ারশ-এর ভিস্টুলা নদীর তীরে এক স্থানীয় বাসিন্দা, আন্দ্রেজ কোরপিকিউইচ, একটি মধ্যযুগীয় তলোয়ার আবিষ্কার করেন। প্রথমে নির্মাণ ধ্বংসাবশেষ বলে ভুল হলেও, পরে এর ধাতুতে একটি ক্রস-আকৃতির প্রতীক দেখা যায়। বিশদ অনুসন্ধানে জানা গেছে, এটি একটি সম্পূর্ণ তলোয়ার, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৯ সেন্টিমিটার। এর গোলাকার হাতল এবং ক্রসগার্ড এটিকে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছে। প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী, তলোয়ারটি ১৩শ বা ১৪শ শতাব্দীর, যা ওয়ারশ প্রতিষ্ঠার সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই সময়কালে পোল্যান্ডের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, বিশেষ করে পিয়াস্ট রাজবংশের বিস্তার লাভ করছিল, যা এই তলোয়ারের ঐতিহাসিক তাৎপর্য আরও বাড়িয়ে তোলে।
তলোয়ারটি ওয়ারশ-এর স্টেট প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের একজন মাস্টারের কাছে ধাতু সংরক্ষণের জন্য হস্তান্তর করা হয়। বিশেষজ্ঞরা এক্স-রে পরীক্ষা এবং ক্লোরাইড অপসারণের জন্য একটি বিশেষ দ্রবণ ব্যবহার করে এর অম্লতা স্বাভাবিক করেন। এরপর, এটি যান্ত্রিকভাবে পরিষ্কার করে একটি প্রতিরক্ষামূলক আবরণ দেওয়া হয় এবং আরও অধ্যয়নের জন্য প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই আবিষ্কারটি পোলিশ প্রত্নতত্ত্বের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এত ভালোভাবে সংরক্ষিত মধ্যযুগীয় নিদর্শন খুব কমই পাওয়া যায়। তলোয়ারের গায়ে থাকা ক্রস চিহ্নটি এটিকে বিশেষত্ব দিয়েছে; এটি কামারের একটি স্বাক্ষর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই চিহ্নটি তলোয়ারের উৎপত্তিকাল নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে এবং এটি নাইট টেম্পলারদের সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা, তা নিয়েও জল্পনা চলছে, যদিও এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। এই তলোয়ারটি কেবল একটি ঐতিহাসিক নিদর্শনই নয়, এটি পোল্যান্ডের মধ্যযুগীয় ইতিহাস এবং ওয়ারশ-এর প্রাথমিক পর্যায় সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভিস্টুলা নদীর মতো জলপথে এমন নিদর্শন খুঁজে পাওয়া পোল্যান্ডের সমৃদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।