মিশরের আবু কি'র উপসাগরে প্রায় ২,০০০ বছরের পুরনো একটি নিমজ্জিত শহরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করছেন, এটি প্রাচীন শহর ক্যানোপাসের একটি সম্প্রসারিত অংশ। শহরটি টলেমাইক এবং রোমান সাম্রাজ্যের সময়কালে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল।
এই ঐতিহাসিক আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন ভবন, প্রত্নবস্তু এবং একটি বন্দর, যা প্রায় ২,০০০ বছরেরও বেশি পুরনো। ভূমিকম্প এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে শহরটি সমুদ্রের নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। আবিষ্কৃত ধ্বংসাবশেষের মধ্যে রয়েছে রাজকীয় মূর্তি ও স্ফিংস, যার মধ্যে দ্বিতীয় রামসেসের কার্টুচ সহ একটি স্ফিংস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, উপাসনা বা বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হত বলে মনে করা চুনাপাথরের ভবন, জল সংরক্ষণের জন্য জলাধার ও পুকুরও পাওয়া গেছে। একটি ১২৫ মিটার দীর্ঘ ডকে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ, পাথরের নোঙর এবং একটি বন্দর ক্রেনও আবিষ্কৃত হয়েছে, যা বাইজেন্টাইন যুগ পর্যন্ত ছোট নৌকা চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হত।
মিশরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রী জানিয়েছেন যে, শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু প্রত্নবস্তু উদ্ধার করা হচ্ছে এবং বাকিগুলো সমুদ্রের নিচে ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে। আলেকজান্দ্রিয়া শহরটি জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বড় হুমকির সম্মুখীন। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে শহরটির এক-তৃতীয়াংশ জলের নিচে চলে যেতে পারে।
এই নিমজ্জিত প্রাচীন শহরগুলিকে একটি সাংস্কৃতিক পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে তুলে ধরার জন্য মিশর আবু কি'র উপসাগরে একটি নিমজ্জিত জাদুঘর স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। এই উদ্যোগটি মিশরের পর্যটন খাতকে শক্তিশালী করার একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ। ২০০৮ সালে ফরাসি স্থপতি জ্যাক রুজেরি এই প্রকল্পের জন্য ধারণাগত নকশা তৈরি করেছিলেন, যেখানে সমুদ্রের তলদেশে কাঁচের তৈরি সুড়ঙ্গ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এই জাদুঘরটি কেবল ঐতিহাসিক নিদর্শন প্রদর্শন করবে না, বরং এই স্থানটিকে দূষণ এবং অবৈধ খনন থেকে রক্ষা করতেও সহায়তা করবে। এই ধরনের একটি নিমজ্জিত জাদুঘর বিশ্বের প্রথম হতে পারে, যা পর্যটকদের জন্য এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।