জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগের আইশমুকাম এলাকার কারকূট নাগ ঝর্ণার সংস্কার কাজের সময় পনেরোটি প্রাচীন হিন্দু মূর্তি উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে এগারোটি শিবলিঙ্গও রয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই মূর্তিগুলি হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। এই প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারটি কাশ্মীর উপত্যকার প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতি নতুন করে আগ্রহ জাগিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এই মূর্তিগুলি সপ্তম থেকে নবম শতাব্দীর কারুকোট রাজবংশের সাথে সম্পর্কিত, যখন কাশ্মীর হিন্দু মন্দির ও স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত ছিল। এই রাজবংশ কাশ্মীর উপত্যকা এবং ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরাংশ শাসন করত।
উদ্ধারের পর, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে এই আবিষ্কারের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য নিশ্চিত করেছেন। মূর্তিগুলি এখন শ্রীনগরের একটি জাদুঘরে গবেষণা ও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে, যেখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এগুলির বয়স এবং উৎস নির্ধারণ করা হবে। এই আবিষ্কারটি কাশ্মীর উপত্যকার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন এবং এটি এই অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের উপর আলোকপাত করে। স্থানীয় কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের কাছে এই স্থানটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ তারা এটিকে কারুকোট রাজবংশের সাথে যুক্ত করে। তাদের মতে, এখানে একসময় একটি মন্দির ছিল অথবা মূর্তিগুলি সংরক্ষণের জন্য এখানে রাখা হয়েছিল। এই স্থানটি বহু শতাব্দী ধরে একটি পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবেও পরিচিত। প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের অধিকর্তা কুলদীপ কৃষাণ সিধ্হা এই আবিষ্কারকে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রমাণ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে বিভাগ এই ধরনের অমূল্য সম্পদগুলি শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধির জন্য সংরক্ষণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই মূর্তিগুলির বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ কাশ্মীর উপত্যকার প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে নতুন তথ্য উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।