স্যাক্সনি-আনহাল্ট ফেডারেল রাজ্যের আলস্টেডের কাছে অবস্থিত ম্যালারবাখ চ্যাপেলের স্থানে সাম্প্রতিক প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফল এনেছে। এই খনন কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে, যেখানে প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রায় ১০০০ মধ্যযুগীয় নিদর্শন এবং ১২ শতক থেকে ১৬ শতকের শুরু পর্যন্ত সময়ের ৫০টিরও বেশি সমাধির সন্ধান পেয়েছেন। 'ন্যায়বিচার। টমাস মুন্টজার এবং কৃষক বিদ্রোহের ৫০০ বছর' শীর্ষক স্মরণীয় বছরের অংশ হিসেবে এই গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে।
উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ১৫ শতক থেকে ১৬ শতকের শুরুর দিকের প্রায় ২৫টি রৌপ্য মুদ্রা, কোমরের ফিতে (বেল্ট বাকল), ছুরি, ঘোড়ার নাল, ক্রসবো বোল্ট এবং তীরের ফলা। এছাড়াও, ১২ শতকের পিংসডর্ফ মৃৎশিল্প সহ অসংখ্য মাটির পাত্রের টুকরা এবং বেশ কিছু সীসার গুলি পাওয়া গেছে। এই সমস্ত জিনিস মধ্যযুগে এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও সামরিক সরঞ্জাম সম্পর্কে ধারণা দেয়।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা ৫০টিরও বেশি সমাধি সম্বলিত একটি বিশাল মধ্যযুগীয় সমাধিস্থলও চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো প্রায় ২৫টি শিশুর কবর, যা চ্যাপেলের পূর্ব অংশে কেন্দ্রীভূত ছিল। এখানে নবজাতক ও শিশুদের সমাহিত করা হয়েছিল, যা শিশুদের প্রতি সম্প্রদায়ের বিশেষ মনোযোগের ইঙ্গিত দেয়।
এই আবিষ্কারগুলি প্রমাণ করে যে ম্যালারবাখ চ্যাপেল কেবল উপাসনার স্থান ছিল না, বরং স্থানীয় বাসিন্দা এবং ভ্রমণকারী ভক্তদের জন্য একটি তীর্থস্থান কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করত। শিশুদের সমাধি ছাড়াও প্রাপ্তবয়স্কদের কবরও পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে চ্যাপেলের সাথে একটি পূর্ণাঙ্গ মধ্যযুগীয় সমাধিক্ষেত্র যুক্ত ছিল। কিছু সমাধিতে, যা সম্ভবত কোনো সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছিল, সেখানে লাল রঙের চিত্র সহ একটি ছোট হলুদ মাটির পাত্র আবিষ্কৃত হয়েছে—এটি হলো ১২ শতকের পিংসডর্ফ মৃৎশিল্প, যা রাইনল্যান্ডের পূর্ব প্রান্তে তৈরি হয়েছিল।
স্টেট অফিস ফর মনুমেন্ট প্রিজারভেশন অ্যান্ড আর্কিওলজির (State Office for Monument Preservation and Archaeology) প্রকল্প পরিচালক ফেলিক্স বিয়ারম্যান মন্তব্য করেছেন: "এই আবিষ্কারগুলো চ্যাপেলের ইতিহাস এবং মধ্যযুগে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবন সম্পর্কে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করে। শিশুদের সমাধি এবং পিংসডর্ফ মৃৎশিল্প বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ—এগুলি সেই সময়ের ঐতিহ্য এবং সামাজিক রীতিনীতিগুলি অনুসরণ করতে আমাদের সাহায্য করে।"
১২ শতকে নির্মিত ম্যালারবাখ চ্যাপেলটি বেশ কয়েকবার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল এবং এটি ক্রমান্বয়ে একটি গ্রামীণ গির্জা, রাস্তার ধারের চ্যাপেল এবং তীর্থস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ১৫২৪ সালের ২৪ মার্চ আলস্টেডের বাসিন্দারা চ্যাপেলটি লুট করে পুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনাটিকে মধ্য জার্মানির কৃষক বিদ্রোহের প্রথম লক্ষণগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের মাধ্যমে ম্যালারবাখ গ্রামের অবশেষও উন্মোচিত হয়েছে, যা ১৪ শতক পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। এর মধ্যে একটি প্রহরী বাড়ির বেসমেন্ট এবং একটি মধ্যযুগীয় মেলার প্রমাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই আবিষ্কারগুলি মধ্যযুগে স্থানীয় জনগণের জীবন ও রীতিনীতি এবং সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় জীবনের কেন্দ্র হিসেবে চ্যাপেলের ভূমিকা গভীরভাবে বুঝতে সাহায্য করে।