বার্সেলোনার প্রাণবন্ত লা রামব্লা অঞ্চলের সান্তা মনিকা অংশে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে এক গুরুত্বপূর্ণ ১৪শ শতাব্দীর প্রতিরক্ষামূলক প্রাচীরের সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রায় ৪৫ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীরটি শহরের মধ্যযুগীয় অতীত সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। প্রত্নতত্ত্ববিদ ইরেনি ক্রুজ এবং বিআইএমএসএ (BIMSA) দ্বারা পরিচালিত এই খননকার্যটি ২০২৫ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হয়েছিল।
দলটি প্রায় ৪৪.৮৮ মিটার দীর্ঘ এবং ২.৯ মিটার পর্যন্ত প্রশস্ত একটি প্রাচীর এবং একটি ৮.৩২ বাই ৪.২১ মিটার পরিমাপের পঞ্চভুজাকার টাওয়ারের সন্ধান পেয়েছে। এই প্রতিরক্ষামূলক প্রাচীরটি একটি পরিখা এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থার অংশ ছিল। প্রাচীরের ভেতরের দিকে, ব্রোঞ্জ সূঁচের সঙ্গে একটি ছোট গাধার অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে, যা মধ্যযুগীয় জীবনযাত্রার এক অনন্য চিত্র তুলে ধরে। এটি ১৬শ শতাব্দীর জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিকও প্রকাশ করে।
এছাড়াও, ১৭৭৪ থেকে ১৮২৩ সালের মধ্যে নির্মিত একটি আধা-বৃত্তাকার পাথর ও মর্টার নির্মিত কাঠামো আবিষ্কৃত হয়েছে, যা লা রামবলার সূচনালগ্নকে নির্দেশ করে এবং এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক বিকাশের সাক্ষ্য বহন করে। এই আবিষ্কারগুলি লা রামবলার একটি বৃহত্তর প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকল্পের অংশ, যার মাধ্যমে পূর্বে বার্সেলোনার এস্তুদি জেনারেল (Estudi General) এবং ১৮শ শতাব্দীর জল সরবরাহ পরিকাঠামো আবিষ্কৃত হয়েছিল।
বর্তমান খননকার্যের লক্ষ্য হল প্রায় ১০০ মিটার মধ্যযুগীয় প্রাচীর নথিভুক্ত করা। আগামী দুই মাস ধরে এই খননকার্য চলবে এবং প্রায় ৫০ মিটার প্রাচীর নথিভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। নথিভুক্তকরণের পর, স্থানগুলি pedestrian access পুনরুদ্ধারের জন্য ঢেকে দেওয়া হবে। এই আবিষ্কারগুলি বার্সেলোনার মধ্যযুগীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, স্থাপত্যের বিবর্তন এবং অতীতের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে উল্লেখযোগ্যভাবে সমৃদ্ধ করেছে। ১৪শ শতাব্দীর এই প্রাচীরটি মূলত শহরের প্রতিরক্ষার জন্য নির্মিত হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে রাভাল প্রাচীর নির্মিত হওয়ার পর এর সামরিক গুরুত্ব হ্রাস পায়। এই খননকার্যের মাধ্যমে শহরের ঐতিহাসিক পরিকাঠামোর বিভিন্ন স্তর উন্মোচিত হয়েছে, যা বার্সেলোনার দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি।