যুক্তরাজ্যে 'জেনারেশন নিউ এরা' গবেষণা: নবজাতকদের জীবনযাত্রা ও বিকাশের উপর নজরদারি

সম্পাদনা করেছেন: Katia Remezova Cath

যুক্তরাজ্য সরকার ২০২৬ সালের গ্রীষ্ম থেকে 'জেনারেশন নিউ এরা' নামে একটি যুগান্তকারী দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা শুরু করতে চলেছে। এই প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৬০,০০০ শিশুর জন্ম থেকে শুরু করে তাদের প্রাথমিক শিক্ষার পর্যায় পর্যন্ত বিকাশের উপর নিবিড় নজর রাখা হবে। গবেষণাটি শিশুদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়গুলি, বিশেষ করে ৯-১১ মাস বয়সে এবং পুনরায় তিন থেকে চার বছর বয়সে পর্যবেক্ষণ করবে। এই গবেষণাটি শিশুদের জীবনের বিভিন্ন দিক গভীরভাবে বোঝার জন্য তাদের দীর্ঘমেয়াদী জীবনযাত্রা অনুসরণ করবে। যুক্তরাজ্যের চারটি জাতির পরিবারগুলিকেই এই গবেষণায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে, যেখানে প্রাথমিক লক্ষ্য ৩০,০০০ শিশুর তথ্য সংগ্রহ করা। এই গবেষণার মাধ্যমে পরিবেশগত ও সামাজিক পরিবর্তন এবং প্রযুক্তির অগ্রগতি শিশুদের বিকাশে কীভাবে প্রভাব ফেলছে, তা বিস্তারিতভাবে জানা যাবে। প্রায় পঁচিশ বছরের মধ্যে এটিই প্রথম দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা।

'জেনারেশন নিউ এরা' শিশু বিকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইউসিএল (University College London)-এর সেন্টার ফর লংগিটিউডিনাল স্টাডিজের সহ-পরিচালক অধ্যাপক অ্যালিসা গুডম্যান এই গবেষণার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন যে, এটি একটি যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক উদ্যোগ যা আগামী বহু বছর ধরে শিশু, বিজ্ঞান এবং সমাজের উপকারে আসবে। তিনি বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের শিশুদের এবং তাদের জীবনযাত্রার উপর সমৃদ্ধ তথ্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। গবেষণায় বাবা-মা এবং নবজাতকদের লালারসের নমুনা ব্যবহার করে জেনেটিক পরীক্ষা করা হবে, যা রোগের সঙ্গে জিনগত সংযোগ অনুসন্ধানে সহায়ক হবে। এছাড়াও, অর্থনীতি, পিতামাতার কর্মসংস্থান, শিশু যত্ন, শিশুদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা, প্রারম্ভিক ভাষার দক্ষতা এবং বিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তুতি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হবে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকদের একটি দল এই তথ্যগুলিকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে।

ইএসআরসি (ESRC)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান স্টিয়ান ওয়েস্টলেক এই গবেষণার সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করে বলেছেন যে, যুক্তরাজ্যে বিশ্বমানের দীর্ঘমেয়াদী গবেষণার একটি শক্তিশালী ঐতিহ্য রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে এই গবেষণাটি আগামী বছর যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের জীবনযাত্রা বুঝতে সাহায্য করবে এবং যুক্তরাজ্যকে আরও সুখী, স্বাস্থ্যকর ও ন্যায্য স্থানে পরিণত করার সম্ভাবনা রাখে। সোয়ানসি, এডিনবরা এবং আলস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদরাও তথ্য সংগ্রহে অবদান রাখবেন, যা একটি বিস্তৃত ও সহযোগিতামূলক পদ্ধতির নিশ্চয়তা দেবে। এই গবেষণাটি যুক্তরাজ্যের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী জন্ম-গোষ্ঠী গবেষণার একটি অংশ, যা বিগত আট দশক ধরে বহু প্রজন্মের মানুষের জীবনযাত্রা অনুসরণ করেছে। 'জেনারেশন নিউ এরা' বর্তমান সমাজের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলির উপর আলোকপাত করবে। এই গবেষণাটি শিশুদের এবং পিতামাতাদের জন্য সরকারি নীতি ও পরিষেবাগুলিকে উন্নত করতে সাহায্য করবে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

উৎসসমূহ

  • thetimes.com

  • Fact-Checking and Accuracy Verification for Developmental Editors

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।