সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, বিলুপ্তপ্রায় ডেনিসোভানদের থেকে প্রাপ্ত একটি নির্দিষ্ট জিনগত রূপ, যা MUC19 জিনের অংশ, প্রারম্ভিক আমেরিকানদের নতুন মহাদেশে বসতি স্থাপনের সময় টিকে থাকার সুবিধা প্রদান করেছিল। এই জিনগত পরিবর্তনটি শ্লেষ্মা তৈরির সাথে জড়িত একটি প্রোটিনের সাথে সম্পর্কিত, যা রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে এই ডেনিসোভান-উৎপন্ন MUC19 রূপটি বর্তমানে আমেরিকান জনগোষ্ঠীর মধ্যে, বিশেষ করে মেক্সিকান বংশোদ্ভূতদের মধ্যে বেশ প্রচলিত। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মেক্সিকান এই জিনগত রূপ বহন করে, যা তাদের জিনোমের সেই অংশগুলির সাথে যুক্ত যেখানে আদিবাসী আমেরিকান ঐতিহ্যের প্রভাব দেখা যায়। এই গবেষণাটি 'সায়েন্স' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি মানব বিবর্তন ও বিভিন্ন পরিবেশে টিকে থাকার জন্য জিনগত অভিযোজনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।
ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডারের ফার্নান্দো ভিলেনেয়া এবং ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ডেভিড পিডের নেতৃত্বে একটি দল এই আবিষ্কার করেছে। তারা দেখেছেন যে এই ডেনিসোভান ডিএনএ সরাসরি আধুনিক মানুষের মধ্যে আসেনি, বরং এটি নিয়ান্ডারথালদের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়েছে। ডেনিসোভান জিনগত অংশটি নিয়ান্ডারথাল-নির্দিষ্ট ডিএনএ-র একটি বৃহত্তর অংশের মধ্যে সংযুক্ত ছিল, যা একটি "ওরিও-এর মতো" কাঠামো তৈরি করেছে। এটি প্রথম নথিভুক্ত ঘটনা যেখানে ডেনিসোভান জিন নিয়ান্ডারথালদের মধ্যস্থতায় মানব জিনোমে প্রবেশ করেছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে এই জিনগত অভিযোজন প্রারম্ভিক মানুষদের নতুন পরিবেশে, যেমন নতুন রোগজীবাণু এবং খাদ্যাভ্যাসের মুখোমুখি হওয়ার সময় সুবিধা দিয়েছিল। প্রাকৃতিক নির্বাচন সম্ভবত হাজার হাজার বছর ধরে এই জিনটিকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই জিনগত উত্তরাধিকার কেবল টিকে থাকাই নয়, বরং নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই গবেষণাটি মানব বিবর্তনের জটিল চিত্রকে আরও স্পষ্ট করে এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের জিনগত বৈচিত্র্য সম্পর্কে নতুন ধারণা দেয়।