সূর্যের কার্যকলাপ বৃদ্ধির কারণে বিশ্বব্যাপী জিওম্যাগনেটিক ঝড় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সৌর শিখা সনাক্ত করা হয়েছে, যা স্যাটেলাইট অপারেশন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই ঘটনাগুলি সৌর চক্র ২৫-এর অংশ, যা ২০৩০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূর্যের কার্যকলাপ বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের বাইরেও, যেমন টেক্সাস বা স্পেনের মতো নিম্ন অক্ষাংশে মেরুজ্যোতি দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণত, কেপি (Kp) মান ৭ বা তার বেশি হলে এটি নিম্ন অক্ষাংশে দৃশ্যমান হয়। যদিও এই ঘটনাগুলি সাধারণত পৃথিবীর জীবনের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে এগুলি মহাকাশের পরিবেশের উপর সূর্যের প্রভাবকে তুলে ধরে। বিজ্ঞানীরা সৌর বায়ুর অবস্থা এবং পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের উপর এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলি নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণ করছেন।
সৌর চক্র ২৫, যা ডিসেম্বর ২০১৯-এ শুরু হয়েছিল, প্রাথমিকভাবে দুর্বল বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হলেও, এটি পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী প্রমাণিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সৌর চক্র ২৫-এ সৌর ফ্লাক্সের পরিমাণ প্রায় ৮% বেশি ছিল। এই সৌর কার্যকলাপের বৃদ্ধি প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। উচ্চ-শক্তির কণাগুলি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে স্যাটেলাইটগুলিতে ক্ষতি করতে পারে, জিপিএস নেটওয়ার্কগুলিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং পাওয়ার গ্রিডে বিভ্রাট ঘটাতে পারে।
১৮৫৯ সালের ক্যারিংটন ইভেন্টের মতো ঘটনাগুলি দেখিয়েছে যে কীভাবে একটি শক্তিশালী সৌর ঝড় যোগাযোগ ব্যবস্থাগুলিকে ব্যাহত করতে পারে এবং এমনকি আগুনও ধরাতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তির উপর এর প্রভাব আরও গুরুতর হতে পারে, কারণ আজকের দিনে আমরা আরও বেশি প্রযুক্তি-নির্ভর। এই ধরনের ঘটনাগুলি মেরু অঞ্চলের কাছাকাছিই বেশি দেখা যায়, তবে শক্তিশালী জিওম্যাগনেটিক ঝড়ের সময়, অরোরা অনেক দক্ষিণেও দেখা গেছে। এই সৌর কার্যকলাপের বৃদ্ধি আমাদের মহাকাশ পরিবেশের উপর সূর্যের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করে তোলে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তির উপর এর প্রভাব মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করে।