সিডনি শহর স্মরণকালের অন্যতম বৃষ্টিবহুল আগস্ট মাস প্রত্যক্ষ করছে। ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, এই মাসে সিডনিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৪৫ মিলিমিটার ছাড়িয়ে গেছে, যা গত ২৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এটি আগস্ট মাসের গড় বৃষ্টিপাত ৭৯.৯ মিলিমিটারের তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।
এই অবিরাম বর্ষণ নিউ সাউথ ওয়েলস এবং কুইন্সল্যান্ড জুড়ে ব্যাপক বন্যার কারণ হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলসের মধ্য-উত্তর উপকূলে গুরুতর বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে, বিশেষ করে ট্যামওয়ার্থ, আর্মাইডেল এবং মোরির মতো শহরগুলিতে বড় আকারের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস স্টেট ইমার্জেন্সি সার্ভিস (SES) শত শত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে, যার মধ্যে অনেক বন্যা উদ্ধার অভিযানও অন্তর্ভুক্ত।
২১শে আগস্ট, ২০২৫-এ সিডনিতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৮২.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০০৭ সালের পর আগস্ট মাসের কোনো একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এই অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কারণ হিসেবে তাসমান সাগরের উপর একটি স্থির উচ্চচাপ বলয়কে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা উপকূলের দিকে আর্দ্র বাতাস প্রবাহিত করছে। এই পরিস্থিতি সাধারণত শুষ্ক আগস্ট মাসের জন্য অপ্রত্যাশিত।
এই চরম বৃষ্টিপাতের ঘটনাগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটেও আলোচিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে উষ্ণ বায়ুমণ্ডল বেশি জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে, যা ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তনের উপর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, তাপপ্রবাহ আরও তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে, এবং বজ্রঝড় থেকে ভারী বৃষ্টিপাত আরও বাড়বে।
এই বন্যা পরিস্থিতি কেবল জীবনযাত্রার উপরই প্রভাব ফেলেনি, বরং পরিকাঠামোগত ক্ষতি এবং বীমা দাবির সংখ্যাও বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পরিবহণ ব্যবস্থাতেও ব্যাঘাত ঘটেছে। এই ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলি অস্ট্রেলিয়ার জন্য একটি নতুন স্বাভাবিকতা হয়ে উঠছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।