প্রবল বর্ষণের কারণে রাজস্থানের সাওয়াই মাধোপুর জেলায় ব্যাপক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে পরিবহন ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত অবিরাম বৃষ্টিতে অনেক শহরাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ৫২ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ কালভার্ট ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সাওয়াই মাধোপুর স্টেশনে রেললাইন ডুবে যাওয়ার কারণে সিগন্যালিং ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। এর ফলে প্রধান শহরগুলিতে ট্রেন চলাচলে ব্যাপক বিলম্ব হচ্ছে। কালভার্ট ভেঙে যাওয়া এবং নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে।
এই চরম আবহাওয়ার কারণে রণথম্ভোর ব্যাঘ্র প্রকল্পের সাফারি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর জয়পুর এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলেছে।
রাজস্থানের এই বন্যা পরিস্থিতি নতুন নয়। ২০১৬ সালে জয়পুরে আকস্মিক বন্যায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং কোটা, বারান, ঝালাওয়ার ও ধৌলপুর জেলাগুলিও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ২০০৬ সালে, বারমের জেলায় ভয়াবহ বন্যায় প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। এই ঘটনাগুলি রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল।
রাজ্যের গড় বৃষ্টিপাত ৫৩১ মিমি, যেখানে পশ্চিম রাজস্থানে গড় বৃষ্টিপাত ২৭৯ মিমি এবং পূর্ব রাজস্থানে ৬৩১ মিমি। তবে, কিছু এলাকায়, যেমন ১৯৯০ সালে বারমেরে, অল্প সময়ের মধ্যে ৭২০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল, যা বন্যার কারণ হয়েছিল। এই ধরনের ঘটনাগুলি প্রায়শই অপ্রত্যাশিত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ঘটে, যা নদীর জলস্তর বাড়িয়ে দেয় এবং পরিকাঠামোর ক্ষতি করে।
এই বন্যা পরিস্থিতি কেবল জনজীবনকেই ব্যাহত করেনি, বরং পর্যটন শিল্পকেও প্রভাবিত করেছে। রণথম্ভোর ব্যাঘ্র প্রকল্পের মতো জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে সাফারি স্থগিত রাখার ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে। এই ধরনের ঘটনাগুলি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পরিকাঠামোগত দুর্বলতা এবং জরুরি অবস্থার মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।