পানামা বর্তমানে গ্রীষ্মমন্ডলীয় তরঙ্গ ২৪ (Tropical Wave #24) এর প্রভাবে অস্থিতিশীল আবহাওয়ার সম্মুখীন হচ্ছে। দেশটির আবহাওয়া ইনস্টিটিউট জানিয়েছে যে, বিশেষ করে ক্যারিবিয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র বৃষ্টিপাত, বজ্রঝড় এবং দমকা হাওয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই গ্রীষ্মমন্ডলীয় তরঙ্গটি স্থানীয়ভাবে মাইক্রোবার্স্ট (microbursts) সৃষ্টি করতে পারে, যা হঠাৎ করে শক্তিশালী বাতাস বইয়ে দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে সক্ষম।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, পানামায় ২০ থেকে ১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, তবে পার্বত্য অঞ্চল এবং ক্যারিবিয়ান উপকূলীয় এলাকায় এই পরিমাণ আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ বন্যাপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছে এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার সময় বাইরের কাজকর্ম থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়েছে। সমুদ্র উত্তাল থাকার সম্ভাবনার কারণে নৌ-পরিবহন ও সামুদ্রিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া ইনস্টিটিউট অফ পানামা (IMHPA) দ্বারা জারি করা সতর্কতা অনুযায়ী, এই গ্রীষ্মমন্ডলীয় তরঙ্গটি ২১শে আগস্ট থেকে ২৩শে আগস্ট পর্যন্ত দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত, বিদ্যুৎ চমকানো এবং দমকা হাওয়ার কারণ হবে। এটি ক্যারিবিয়ান সাগর এবং মধ্য আমেরিকার বেসিনে গ্রীষ্মমন্ডলীয় তরঙ্গ ২৪ এবং ২৫ এর প্রভাবের সাথে যুক্ত, যা এই অঞ্চলে বায়ুমণ্ডলীয় অস্থিরতা বৃদ্ধি করছে। এই সময়ে, দৈনিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩০ থেকে ১৬০ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে, যা অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, IMHPA নদীগুলোর জলস্তর বৃদ্ধি, ভূমিধস, গাছ পড়ে যাওয়া এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বন্যার মতো সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চলে, যেমন Chiriquí, Veraguas, Coclé, Panama Oeste, Panama, Darién, Emberá অঞ্চল, Guna Yala অঞ্চল, Colón, Bocas del Toro, এবং Ngäbe Buglé অঞ্চলে এই আবহাওয়ার প্রভাব বেশি অনুভূত হতে পারে।
জাতীয় বেসামরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা (Sinaproc) জনগণকে সম্ভাব্য জরুরি অবস্থা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেছে: প্লাবিত নদী বা স্রোত অতিক্রম না করা, বৈদ্যুতিক তার স্পর্শ করা বা তার উপর দিয়ে হাঁটা থেকে বিরত থাকা, পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা বাড়ি, গাছ বা খুঁটি থেকে দূরে থাকা, এবং ছাদ ধসে পড়া বা গাছ পড়ার বিরুদ্ধে চরম সতর্কতা অবলম্বন করা। এছাড়াও, প্লাবিত রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানো এড়িয়ে চলতে এবং সাবধানে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভূমিধসের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে থাকার এবং কর্তৃপক্ষের ঘোষণা মেনে চলার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।