২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ফিলিপাইনসে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় বুয়ালয়, যা স্থানীয়ভাবে 'ওপং' নামে পরিচিত। এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি ১১০ কিমি/ঘন্টা বেগে সান পোলিকারপো, পূর্ব সামারে আঘাত হানে। এর ফলে দেশের মধ্য-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলিতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয় এবং কিছু এলাকায় সামান্য বন্যা ও ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমিধস ও বন্যাপ্রবণ এলাকা থেকে ৪,৩৩,০০০ জনেরও বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আলবে প্রদেশের বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। মাউন্ট মায়োন আগ্নেয়গিরির ঢালে সম্ভাব্য কাদা প্রবাহের (mudflow) বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মাসবেতে প্রদেশে চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন গাছ, দেয়াল এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন, এবং একজন বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। মাসবেতের গভর্নর জানিয়েছেন যে রাজ্যের বেশিরভাগ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, যা ত্রাণ সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে এবং আঞ্চলিক বন্দরগুলি পুনরায় খোলার জন্য জরুরি সহায়তার আবেদন করা হয়েছে।
বুয়ালয় এই বছর ফিলিপাইনসে আঘাত হানা ১৫তম গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়। প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার ব্যাসের বৃষ্টি ও বাতাসের বলয় নিয়ে দ্রুত উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হওয়া এই ঝড়টি ম্যানিলার দক্ষিণে ঘনবসতিপূর্ণ প্রদেশগুলির কাছ দিয়ে বয়ে যায় এবং দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবেশ করে। সেখানে এটি আরও শক্তিশালী হয়ে ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বুয়ালয় ফিলিপাইনসে আঘাত হানার পর ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যা এই অঞ্চলের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ।
এই ঘূর্ণিঝড়টি ২০২৫ সালের প্রশান্ত মহাসাগরীয় ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের একটি অংশ। এই মৌসুমে, বিশেষ করে সেপ্টেম্বর মাসে, পূর্ব সাগরে (দক্ষিণ চীন সাগর) চারটি ঘূর্ণিঝড় এবং একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘূর্ণিঝড়গুলি আরও শক্তিশালী হচ্ছে এবং এদের গতিপথও পরিবর্তিত হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনাগুলি ফিলিপাইনসের মতো দেশগুলির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ তারা প্রায়শই প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়।
এই ঘূর্ণিঝড়টি ফিলিপাইনসের অবকাঠামোর উপরও প্রভাব ফেলেছে, যার মধ্যে রাস্তাঘাট, সেতু এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুর্যোগের পর দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্গঠন কার্যক্রম অত্যন্ত জরুরি।