ভিয়েতনামের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুয়ালোই। এটি ছিল এই বছর পূর্ব সাগরে (East Sea) আঘাত হানা দশম ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৩৩ কিলোমিটার বেগে বাতাস এবং এক মিটারের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস নিয়ে আসে, যার ফলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এই তীব্র আবহাওয়ার কারণে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়টি ভিয়েতনামের উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় উপকূলের ১৮.৩° উত্তর অক্ষাংশ এবং ১০৭.৪° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছিল। এর প্রভাবে কেন্দ্রীয় ও উত্তর ভিয়েতনামের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবল বাতাস, উত্তাল সমুদ্র এবং ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। দা Nang এবং Hue-এর মতো প্রধান শহরগুলিতে লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। চারটি উপকূলীয় বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিমান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
বুয়ালোই, যা ফিলিপাইনে টাইফুন ওপোং নামেও পরিচিত, এই বছর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২০তম নামকরণ করা ঝড় এবং নবম টাইফুন ছিল। ভিয়েতনামে আঘাত হানার আগে, বুয়ালোই ফিলিপাইনের কিছু অংশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। ফিলিপাইনে এটি অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু, ৩৯ জন আহত এবং ১৩ জন নিখোঁজ হওয়ার কারণ হয়েছিল।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধির বিষয়টি এই ঘটনা আবারও সামনে এনেছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে আরও শক্তিশালী এবং আর্দ্র ঝড় তৈরি হচ্ছে। ভিয়েতনামের মতো উপকূলীয় দেশগুলি এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ভিয়েতনাম সরকার এবং সামরিক বাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। হাজার হাজার সৈন্য এবং সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এই দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা এবং পুনরুদ্ধারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।