পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সিন্ধু নদীর জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ১ লক্ষ ২১ হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ট্রিম্মু ব্যারেজে জলের প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা পার্শ্ববর্তী সম্প্রদায়গুলির জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে। সেহওয়ান অঞ্চলের নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) জানিয়েছে, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দেশজুড়ে হাজার হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গবাদি পশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ত্রাণ প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জরুরি সরবরাহ পাঠিয়েছে।
একটি শক্তিশালী আবহাওয়া ব্যবস্থার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যা ইসলামাবাদ এবং পাঞ্জাবের উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত এবং বজ্রঝড় নিয়ে আসতে পারে, যার ফলে শহরাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বাসিন্দাদের সতর্কতা অবলম্বন এবং নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধার অভিযানের সময় একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।
পাকিস্তানের অর্থনীতিও এই বন্যার দ্বারা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। কৃষিখাত, যা দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড, তা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে এই বন্যা পাকিস্তানের জিডিপি বৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং এটি শূন্য থেকে এক শতাংশে নেমে আসতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে, পাকিস্তান প্রতি তিন থেকে চার বছর পর পর বন্যার সম্মুখীন হয়, কিন্তু এই বছরের বন্যা পূর্বের সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ২০০৫ সালের বন্যার পর থেকে এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যাগুলির মধ্যে একটি। এই দুর্যোগ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহায়তাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে।