৩১শে আগস্ট, ২০২৫ তারিখে পূর্ব আফগানিস্তানে একটি শক্তিশালী ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যার ফলে প্রায় ৬২২ জনের প্রাণহানি এবং ১৫০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। কুনার এবং নারঙ্গহার প্রদেশ এই বিপর্যয়ের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল জালালাবাদের ২৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে, ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার গভীরে। এই অগভীর গভীরতা ভূমিকম্পের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছে। কুনার প্রদেশের বেশ কয়েকটি গ্রাম সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আরও অনেক গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরী উদ্ধার অভিযান চলছে এবং আফগান কর্তৃপক্ষ আহতদের সরিয়ে নিতে ও ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে জরুরি সহায়তা পৌঁছে দিতে হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে। স্থানীয় উদ্ধারকারী দল ও স্বেচ্ছাসেবকরা বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায়গুলিতে পৌঁছাতে এবং চিকিৎসা সহায়তা প্রদানে কাজ করছে।
ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এই অঞ্চলে প্রায়শই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভারত ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে এর অবস্থান। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত সাড়া দিয়েছে; ইরান সহ বিভিন্ন দেশ মানবিক, চিকিৎসা ও ত্রাণ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, যেমন ইউএনএইচসিআর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার জন্য মাঠে কাজ করছে।
এই ভূমিকম্প আফগানিস্তানের জন্য একটি বড় আঘাত, যা এমনিতেই মানবিক সংকটের সম্মুখীন। দুর্যোগের ফলে রাস্তাঘাট, স্কুল ও হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা জরুরি পরিষেবাগুলিতে মানুষের প্রবেশাধিকারকে আরও সীমিত করেছে। ভূমিকম্পের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের মধ্যে রয়েছে মানসিক আঘাত, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং জীবিকার সংকট। এই কঠিন সময়ে, আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।