ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে দ্বীপজুড়ে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, প্রধান সড়কগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে এবং বহু বাসিন্দা আটকা পড়ে।
রাজধানী ডেনপাসারে, অবিরাম বৃষ্টির কারণে দুটি ভবন ধসে পড়ে, যার ফলে চারজনের মৃত্যু হয়। জেমব্রানা অঞ্চলে আরও দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যেখানে ৮৫ জন বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকারী দলগুলি জলমগ্ন এলাকাগুলিতে তল্লাশি চালাচ্ছে এবং কর্মকর্তারা আরও হতাহতের আশঙ্কা করছেন।
জলমগ্ন রাস্তার কারণে বালির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশাধিকার মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়েছে, যার ফলে ব্যাপক ভ্রমণ বিলম্ব হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে প্রধান সড়কগুলি সম্পূর্ণভাবে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে, যা দ্বীপ জুড়ে যান চলাচলে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। কর্তৃপক্ষ ভ্রমণকারীদের বিমানবন্দর সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিগুলি নজরে রাখতে এবং উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে। প্রায় ২০০ জন উদ্ধারকারী আটকে পড়া বাসিন্দাদের সহায়তা করতে এবং জলমগ্ন রাস্তাগুলি পরিষ্কার করার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
বালির বিভিন্ন অংশে বন্যা পরিস্থিতি এখনও বিদ্যমান, এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া দলগুলি মৌলিক পরিষেবাগুলি পুনরুদ্ধার এবং গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাগুলিতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। এই ঘটনাটি জলবায়ু পরিবর্তনের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটের সাথেও সম্পর্কিত। যদিও বালির জলবায়ু সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলীয়, তবে সাম্প্রতিক দশকগুলিতে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলির ফ্রিকোয়েন্সি বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫০-এর দশক থেকে ইন্দোনেশিয়ার বালির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গড় এবং সর্বোচ্চ উভয় ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হয়েছে। এই ধরনের ঘটনাগুলি দ্বীপের পরিকাঠামো এবং পর্যটন শিল্পের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে, যা বালির অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকাশক্তি।
এই দুর্যোগের মোকাবিলায় ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা (BNPB) দ্রুত সাড়া দিচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করছে। এই বন্যা পরিস্থিতি বালির মতো একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রের জন্য একটি বড় ধাক্কা। অনেক রাস্তা জলমগ্ন হওয়ায় এবং বিমানবন্দরে প্রবেশাধিকার সীমিত হওয়ায় ভ্রমণকারীদের অসুবিধা হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনাগুলি দ্বীপের পর্যটন-নির্ভর অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।