সুইজারল্যান্ডের গবেষকদের সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুসারে, আল্পস পর্বতমালার উত্তরাঞ্চলে সুপারসেলের মতো শক্তিশালী ঝড়গুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ঘূর্ণায়মান ঝড়গুলো মারাত্মক বাতাস, প্রবল বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি এবং টর্নেডোর মতো বিধ্বংসী ঘটনা ঘটাতে সক্ষম, যা কৃষি, পরিকাঠামো এবং জনজীবনের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে আল্পসের উত্তরাঞ্চলে সুপারসেলের ঘটনা ৫০% পর্যন্ত বাড়তে পারে। সুপারসেল ইউরোপের অন্যতম তীব্র আবহাওয়ার ঘটনা, যা গ্রীষ্মকালে বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়, তবে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এটি শরতের সময় বেশি দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা একটি নতুন উচ্চ-রেজোলিউশনের জলবায়ু মডেল তৈরি করেছেন যা ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সুপারসেলের ঘটনাগুলো নির্ভুলভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও এই মডেলটি ছোট এবং স্বল্পস্থায়ী ঝড়গুলোকে শনাক্ত করতে পারেনি।
বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত এই ফলাফলগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় প্রস্তুতি উন্নত করতে এবং সুপারসেল-সম্পর্কিত ক্ষতি কমাতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ঝড়গুলোর বৃদ্ধি কেবল ইউরোপের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমস্যা নয়, বরং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের বৃহত্তর প্রভাবের একটি প্রতিচ্ছবি। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে বায়ুমণ্ডলে সঞ্চিত শক্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা সুপারসেলের মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোকে আরও তীব্র করে তোলে।
কিছু গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে ভবিষ্যতে এই ঝড়গুলো আরও দীর্ঘস্থায়ী এবং বিস্তৃত এলাকায় প্রভাব ফেলতে পারে, যা পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। এই ধরনের ঘটনাগুলো আমাদের পরিবেশের উপর মানুষের কার্যকলাপের প্রভাব সম্পর্কে গভীর উপলব্ধির সুযোগ করে দেয়, যা সম্মিলিতভাবে আরও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করতে পারে। এই পরিবর্তনগুলো মোকাবেলার জন্য অভিযোজন কৌশল এবং প্রশমন ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।