পরিচালক ড্যান ফারাহ-এর তৈরি ডকুমেন্টারি ফিল্ম ‘দ্য এজ অফ ডিসক্লোজার’ (The Age of Disclosure)-এর ট্রেলার প্রকাশের ঘোষণাটি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আসা অভূতপূর্ব কিছু বিবৃতির কারণে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই বিবৃতিগুলি মূলত ‘অশনাক্ত আকাশযান জনিত ঘটনা’ বা ইউএপি (UAP) সংক্রান্ত।
এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট সেক্রেটারি মার্কো রুবিও (Marco Rubio)। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে বন্ধ থাকা পারমাণবিক স্থাপনাগুলির (closed nuclear facilities) উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া বস্তুগুলির সাথে সম্পর্কিত বেশ কিছু ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। রুবিও (Rubio) দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছেন যে এই রহস্যময় আকাশযানগুলি “আমাদের নয়” (“not ours”)। এই বছরের শুরুতে সাউথ বাই সাউথওয়েস্ট (SXSW) চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হওয়া ছবিটি প্রাইম ভিডিওতে (Prime Video) স্ট্রিমিংয়ের জন্য ২১ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে নির্ধারিত হয়েছে।
পরিচালক ফারাহ (Farah) এই ডকুমেন্টারিটিকে একটি দীর্ঘমেয়াদী সরকারি ষড়যন্ত্রের পর্দা উন্মোচন হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি দাবি করেন, এই ষড়যন্ত্রটি প্রায় ৮০ বছর ধরে চলে আসছে, যা অ-মানব বুদ্ধিমত্তা (non-human intelligence) এবং বহির্জাগতিক প্রযুক্তিকে (extraterrestrial technologies) রিভার্স-ইঞ্জিনিয়ারিং করার প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত। এই দীর্ঘদিনের গোপনীয়তার বিষয়টিই ছবিটির মূল উপজীব্য।
তথ্যচিত্রটিতে মার্কিন সরকার, সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার ৩৪ জন বর্তমান ও প্রাক্তন অভ্যন্তরীণ ব্যক্তির (insiders) সাক্ষাৎকার রয়েছে। এদের মধ্যে ইউএপি টাস্ক ফোর্সের (UAP Task Force) প্রাক্তন প্রধান জে স্ট্রাটন (Jay Stratton) অন্যতম, যিনি দৃঢ়ভাবে দাবি করেছেন যে তিনি ব্যক্তিগতভাবে “অ-মানব যান এবং অ-মানব প্রাণী” (“non-human craft and non-human beings”) দেখেছেন। হাউস পার্মানেন্ট সিলেক্ট কমিটি অন ইন্টেলিজেন্সের (House Permanent Select Committee on Intelligence) সদস্য কংগ্রেসম্যান আন্দ্রে কারসনও (André Carson) জোর দিয়ে বলেছেন যে এই বস্তুগুলির কৌশলগুলি আগে “দেখা যায়নি” (“not been seen”)।
স্ট্রাটন (Stratton) এই প্রযুক্তি আয়ত্ত করার প্রতিযোগিতাকে ম্যানহাটন প্রকল্পের (Manhattan Project) সঙ্গে তুলনা করেছেন, এটিকে “স্টেরয়েডের উপর একটি পারমাণবিক বোমা” (“an atomic bomb on steroids”) হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এই তুলনাটি ইউএপি সংক্রান্ত তথ্যের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব এবং এর বৈশ্বিক প্রভাবকে জোরালোভাবে তুলে ধরে।
ট্রেলারে প্রকাশিত বিবৃতিগুলি তথ্য গোপন রাখার অনুমোদিত সীমা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। রুবিও (Rubio) ইঙ্গিত দিয়েছেন যে “জানার প্রয়োজন” (“need to know”) নামক যে ব্যবস্থাটি এমনকি রাষ্ট্রপতিরাও মেনে চলতেন, তা এখন “নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে” (“got out of control”)। পরিচালক ফারাহ (Farah) এই পরিস্থিতিকে “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভুল তথ্য প্রচার” (“greatest disinformation campaign in US history”) হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার আহ্বান জানিয়েছেন। এই ডিসক্লোজার প্রচেষ্টায় সিনেটর কার্স্টেন জিলিব্র্যান্ড (Kirsten Gillibrand) এবং তথ্য প্রকাশের পক্ষে থাকা কংগ্রেসম্যান আনা পলিনা লুনাও (Anna Paulina Luna) অংশ নিয়েছেন। এই সমস্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য এমন সময়ে সামনে আসছে যখন ২০২৩ সাল থেকে ইউএপি সংক্রান্ত নথিগুলি গোপনীয়তা মুক্ত করার জন্য কংগ্রেসের প্রচেষ্টা চলছে।