আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ব্রাজিলের চেম্বার অফ ডেপুটিজে অজ্ঞাত বায়বীয় ঘটনা (Unidentified Aerial Phenomena - UAP) বা ইউএফও (UFO) নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ জনশুনানি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই শুনানির মূল উদ্দেশ্য হলো ইউএফওবিদ্যা, তথ্যের অধিকার আইন (Access to Information Law - LAI) এর প্রয়োগ এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের উপর এর প্রভাব খতিয়ে দেখা।
এই উদ্যোগের প্রধান উদ্যোক্তা ফেডারেল ডেপুটি চিকো আলেনকার (PSOL-RJ), যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের জুলাই ২০২৩-এর একটি অনুরূপ শুনানির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। সেই শুনানিতে সামরিক কর্মকর্তারা ইউএফও sightings নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন। আলেনকার বিশ্বাস করেন যে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গভীরতর বোঝাপড়া তৈরি হবে এবং স্বচ্ছতা ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি আলোচিত হবে।
ব্রাজিলে ইউএফও সংক্রান্ত তথ্যের স্বচ্ছতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ২০০৮ সাল থেকে বিমান বাহিনী তাদের সংগৃহীত ইউএফও সংক্রান্ত নথি জাতীয় আর্কাইভে স্থানান্তর করতে শুরু করে, যা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ২০১২ সালে তথ্যের অধিকার আইন (LAI) কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইউএফও সংক্রান্ত তথ্যের জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এই আইনটি সরকারি তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে, যা জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের এই ধরনের আলোচনায়, ডেমোক্রেটিক কংগ্রেসম্যান রবার্ট গার্সিয়া মন্তব্য করেছেন যে, "UAP, যা-ই হোক না কেন, আমাদের সামরিক ও বেসামরিক বিমানের জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের আরও বেশি রিপোর্ট উৎসাহিত করা উচিত, কম নয়। আমরা যত বেশি বুঝব, ততই নিরাপদ থাকব।" এই মন্তব্যটি ব্রাজিলের আসন্ন শুনানির প্রাসঙ্গিকতা আরও বাড়িয়ে তোলে।
ব্রাজিলের ইতিহাসে ইউএফও সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ১৯৮৬ সালের ১৯শে মে-র "নাইট অফ দ্য ইউএফওস"। সেই রাতে ২১টি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু ব্রাজিলের আকাশসীমায় দেখা গিয়েছিল, যা সামরিক ও বেসামরিক উভয় সাক্ষী দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছিল। এই ঘটনাটি ইউএফওবিদ্যার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে এবং এটি ব্রাজিলের সরকারি নথিগুলিতেও স্থান পেয়েছে।
এই জনশুনানিটি ব্রাজিলে ইউএফও বা ইউএপি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং আলোচনার একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি শুধুমাত্র একটি বৈজ্ঞানিক বা কৌতূহল উদ্দীপক বিষয় নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সাথেও জড়িত, যা এই শুনানির মাধ্যমে আরও স্পষ্ট হবে। তথ্যের অধিকার আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে এই বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা আনা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও এই আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।