মেক্সিকোর পোপোকাটেপেটল আগ্নেয়গিরির আকাশে সম্প্রতি একদল অস্বাভাবিক আলো দেখা গেছে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনাটি ভিনগ্রহের প্রাণী বা পৃথিবীর গভীরে বসবাসকারী কোনো উন্নত সভ্যতার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ঘটনাটি ঘটেছিল পোপোকাটেপেটল আগ্নেয়গিরির উপরে, যা মেক্সিকোর অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। @webcamsdemexico নামক একটি এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে ৩০ মিনিটের একটি টাইম-ল্যাপসকে মাত্র ৩০ সেকেন্ডে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ভিডিওটিতে আগ্নেয়গিরির আকাশে অস্বাভাবিক আলো দেখা যাচ্ছে।
ভিডিওটির সাথে একটি বার্তা ছিল: "ওটা কী ছিল? পোপোকাটেপেটল আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ এবং আজ রাতে আকাশে অনেক আলো। পুয়েবলা রাজ্যের টিয়াঙ্গুইসমানালকো থেকে লাইভ ভিউ। আপনি কী ভাবেন?" এই ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব প্রচলিত আছে। কিছু ব্যবহারকারী মনে করেন, এই আলো হয়তো ভিনগ্রহের মহাকাশযানের। আবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম ফর দ্য হিউম্যান এনভায়রনমেন্টের গবেষক টিম লোমাস এবং ব্রেন্ডন কেস একটি "ক্রিপ্টোটেরেস্ট্রিয়াল" তত্ত্বের কথা বলেছেন। এই তত্ত্ব অনুসারে, কিছু উড়ন্ত বস্তু পৃথিবীর গভীরে বসবাসকারী অ-মানব বুদ্ধিমান প্রাণীদের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। তবে, তারা এই তত্ত্বের সম্ভাব্যতা মাত্র ১ থেকে ১০ শতাংশ বলে মনে করেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামগুলিও প্রস্তাব করেছে যে আগ্নেয়গিরিটি একটি "আন্তঃমাত্রিক পোর্টাল" হিসাবে কাজ করতে পারে।
পোপোকাটেপেটল আগ্নেয়গিরিটি মেক্সিকোর অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং এটি প্রায়শই গ্যাস ও ছাই নির্গত করে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বিশেষ করে ২০১৪ সালের পর থেকে, আগ্নেয়গিরিটি পুনরায় সক্রিয় হয়েছে এবং নিয়মিতভাবে অগ্ন্যুৎপাত ও ধোঁয়া নির্গত করছে। ১৯৯৪ সাল থেকে আগ্নেয়গিরিটি প্রায় ৭০ বছর ধরে সুপ্ত থাকার পর আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং এর পর থেকে এটি প্রায়শই অগ্ন্যুৎপাত ঘটিয়েছে।
ভিনগ্রহের প্রাণী বা পৃথিবীর গভীরে বসবাসকারী উন্নত সভ্যতার ধারণা নতুন নয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই "ক্রিপ্টোটেরেস্ট্রিয়াল" তত্ত্বটি নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেখানে তারা প্রস্তাব করেছেন যে অজানা বুদ্ধিমান সত্তা পৃথিবীতে লুকিয়ে থাকতে পারে, হয় মাটির নিচে, চাঁদের অপর পাশে, অথবা এমনকি মানুষের ছদ্মবেশে আমাদের মাঝেও থাকতে পারে। যদিও এই ঘটনাটি অনেক জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে, তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। এই রহস্যময় আলো আসলে কী, তা নিয়ে অনুসন্ধান চলছে।