কুইন্সল্যান্ডের নূসা উপকূলের কাছে একটি হ্যাম্পব্যাক তিমি এবং তার শাবক সম্প্রতি একটি শার্ক নেটে জড়িয়ে পড়েছিল, যা উদ্ধারকারীদের তৎপরতায় অবশেষে মুক্ত হয়েছে। এই ঘটনাটি ড্রোন ফুটেজে ধরা পড়েছে, যেখানে দেখা যায় মা তিমিটি জালে আটকা পড়ে এবং অজান্তেই তার শাবককেও জড়িয়ে ফেলে। সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী গবেষক ডঃ ওলাফ মেইনেকে উল্লেখ করেছেন যে, যদিও এই ধরনের ঘটনা প্রতি বছরই ঘটে থাকে, তবে এটি ছিল একই সময়ে চারটি তিমির জালে আটকা পড়ার প্রথম নথিভুক্ত ঘটনা। তিনি আরও জোর দিয়েছেন যে, এই ঘটনাগুলিতে প্রায়শই মা ও শাবক জড়িত থাকে, যেখানে শাবকের ডুবে যাওয়ার এবং বিপদে পড়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
এই উদ্ধার অভিযানটি শার্ক নেটগুলির ব্যবহার এবং সামুদ্রিক জীবনের উপর এদের প্রভাব নিয়ে চলমান বিতর্ককে নতুন করে সামনে এনেছে, বিশেষ করে তিমি পরিযায়নের সময়ে। পরিবেশকর্মীরা এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পরিযায়নের মূল সময়ে এই নেটগুলি সরানোর জন্য ক্রমাগত আহ্বান জানাচ্ছেন। নিউ সাউথ ওয়েলসে তিমি পরিযায়নের সময় শার্ক নেটগুলি সরানো হলেও, কুইন্সল্যান্ডে সেগুলি সারা বছর ধরে থাকে, যা সামুদ্রিক প্রাণীর উল্লেখযোগ্য ক্ষতির কারণ হয়। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে তিমির জালে আটকা পড়ার ঘটনা নতুন নয়। কুইন্সল্যান্ডে গত এক দশকে (২০১৪-২০২৩) শার্ক নেট ও ড্রামলাইনগুলিতে প্রায় ৭,৮০৮টি অনিচ্ছাকৃত অ-লক্ষ্য প্রাণী আটকা পড়েছে, যার মধ্যে ৭৩৪টি সুরক্ষিত প্রাণী ছিল। এই সময়ে, ১৫টি গুরুতর বিপন্ন ধূসর নার্স হাঙ্গর সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে কুইন্সল্যান্ডের শার্ক নেটগুলিতে ১০৩টিরও বেশি তিমি আটকা পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেক বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদী গোষ্ঠী ড্রোন নজরদারি এবং ইলেকট্রনিক প্রতিরোধকের মতো বিকল্প পদ্ধতির উপর জোর দিচ্ছেন, যেগুলি আরও মানবিক ও কার্যকর বলে বিবেচিত হচ্ছে। ডঃ মেইনেকের গবেষণা তিমিদের স্বাস্থ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের উপর আলোকপাত করে, যা সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের সূক্ষ্ম ভারসাম্যকে তুলে ধরে। এই ধরনের ঘটনাগুলি আমাদের প্রকৃতির সাথে সংযোগ এবং আমাদের কার্যকলাপের পরিণতির এক শক্তিশালী স্মারক। এগুলি উপকূলীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে আরও মানবিক ও টেকসই পদ্ধতির দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যা আমাদের সামুদ্রিক প্রতিবেশীদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হওয়ার জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।