মন্টারে বে অ্যাকোয়ারিয়াম রিসার্চ ইনস্টিটিউট (MBARI) গভীর সমুদ্রে অক্টোপাসদের জীবনযাত্রা এবং তাদের বাহুর কার্যকারিতা বোঝার জন্য আইরিস (EyeRIS) নামে একটি অত্যাধুনিক ইমেজিং সিস্টেম তৈরি করেছে। এই প্রযুক্তিটি ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে অবস্থিত বিখ্যাত অক্টোপাস গার্ডেনে পার্ল অক্টোপাসদের উপর গবেষণা চালিয়েছে। আইরিস সিস্টেমটি একটি উচ্চ-রেজোলিউশন ক্যামেরা ব্যবহার করে, যা মাইক্রোলেন্সের সাহায্যে একাধিক ভিউ ধারণ করতে পারে। এর ফলে, অক্টোপাসদের নড়াচড়ার ত্রিমাত্রিক পুনর্গঠন সম্ভব হয় এবং বিজ্ঞানীরা তাদের বাহুর বক্রতা ও টান রিয়েল-টাইমে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এই গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে, পার্ল অক্টোপাসরা চলাচলের সময় তাদের বাহুতে অস্থায়ী পেশী-সন্ধি ব্যবহার করে। এই আবিষ্কার বায়ো-ইনস্পায়ার্ড রোবোটিক্সের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, এই অক্টোপাসরা তাদের বাহুর পেশী-সন্ধি ব্যবহার করে সমুদ্রের তলদেশে চলাচল করে, যেখানে তাদের বাহুর বক্রতা এবং টান নির্দিষ্ট স্থানে কেন্দ্রীভূত থাকে। এই সরলীকৃত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভবিষ্যতে রোবোটিক নকশার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে।
অক্টোপাস গার্ডেন, যা ডেভিডসন সিমাউন্টের কাছে ১০,৫০০ ফুট গভীরে অবস্থিত, সেখানে প্রায় ৬,০০০ এরও বেশি পার্ল অক্টোপাসের সমাগম দেখা গেছে, যা পৃথিবীর বৃহত্তম পরিচিত অক্টোপাস সমাবেশ। এই স্থানে উষ্ণ প্রস্রবণ থেকে আসা উষ্ণ জল ডিমের বিকাশে সহায়তা করে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত ডিম ফোটাতে সাহায্য করে। এই উষ্ণ পরিবেশ অক্টোপাসের ডিমের বিকাশের সময়কালকে প্রায় অর্ধেক কমিয়ে দেয়, যা তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। MBARI-এর বায়োইনস্পিরেশন ল্যাবের প্রধান প্রকৌশলী ককানি কাটিজা বলেছেন, "প্রকৃতি থেকে আমরা প্রকৌশলগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য অনুপ্রেরণা খুঁজি। অক্টোপাসরা হাড়বিহীন হওয়া সত্ত্বেও জটিল ভূখণ্ডে সহজে চলাচল করতে পারে। আইরিস সিস্টেম এই অক্টোপাসদের বায়োমেকানিক্স অধ্যয়নের ক্ষেত্রে একটি গেম-চেঞ্জার।" এই প্রযুক্তি কেবল অক্টোপাসের জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন তথ্যই দিচ্ছে না, বরং ভবিষ্যতের রোবোটিক নকশার জন্যও নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে।