পর্তুগালের সেটুবাল উপদ্বীপে অবস্থিত সেরা দা আররাবিডা (Serra da Arrábida) এখন ইউনেস্কো বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ (UNESCO Biosphere Reserve) হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত। এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতিটি চীনের হ্যাংঝোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কংগ্রেসের সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয়েছিল।
নতুন এই রিজার্ভটি প্রায় ২০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে আটলান্টিক উপকূল, চুনাপাথরের ক্লিফ, ভূমধ্যসাগরীয় গুল্মভূমি এবং ঘন পাইন বন সহ বিভিন্ন ধরণের বাস্তুতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি জীববৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র, যেখানে ১,৪০০ টিরও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে, যা পর্তুগালের মোট উদ্ভিদকুলের প্রায় ৪০%। এর মধ্যে অনেক বিরল এবং স্থানীয় প্রজাতিও অন্তর্ভুক্ত।
আররাবিডার এই স্বীকৃতি এখানকার অনন্য প্রাকৃতিক ঐতিহ্য এবং টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির উপর আলোকপাত করে। এই অঞ্চলটি তার সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবন এবং প্রায় ৬৮,০০০ বাসিন্দাদের ঐতিহ্যবাহী কারুকার্যপূর্ণ মৎস্য শিকার ও স্থানীয় কৃষি উৎপাদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সহাবস্থানের জন্যও পরিচিত। এই রিজার্ভটি বিশ্বজুড়ে ৭০০ টিরও বেশি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের একটি নেটওয়ার্কের অংশ, যার মধ্যে গ্যালাপাগোস, সেরেনগেটি এবং ইয়েলোস্টোন-এর মতো বিখ্যাত স্থানও রয়েছে।
এই স্বীকৃতির ফলে আররাবিডা অঞ্চলের পরিবেশগত, অর্থনৈতিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সুরক্ষা ও প্রচার আরও জোরদার হবে। এই অঞ্চলটি টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীনের হ্যাংঝোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কংগ্রেসে এই ঘোষণাটি আসে। এই সম্মেলনে প্রায় ৪,০০০ প্রতিনিধি ১৫০ টিরও বেশি দেশ থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং এটি ছিল এশিয়ায় অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্ব বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ সম্মেলন।
আররাবিডার জীববৈচিত্র্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এখানে প্রায় ১,৪০০ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া যায়, যা পর্তুগালের মোট উদ্ভিদকুলের ৪০%। এছাড়াও, প্রায় ২০০ প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণী এবং ২০০০ টিরও বেশি সামুদ্রিক প্রজাতি এই অঞ্চলে বাস করে। এই নতুন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের ঘোষণা টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে প্রকৃতির সামঞ্জস্যপূর্ণ সহাবস্থানের উপর জোর দেয়। এটি একটি জীবন্ত পরীক্ষাগার হিসাবে কাজ করবে, যেখানে পরিবেশগত, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে টেকসই উন্নয়নের নতুন পথ খুঁজে বের করা হবে।