রিও ডি জেনিরো বোটানিক্যাল গার্ডেন 'মোনা ক্যাগারা – ফ্লোরার চিত্রিত নির্দেশিকা' নামে একটি নতুন প্রকাশনা উন্মোচন করেছে। এই নির্দেশিকাটি ক্যাগারা দ্বীপপুঞ্জ প্রাকৃতিক স্মৃতিসৌধ (MoNa Cagarras)-এ পাওয়া ১৫টি স্থানীয় আটলান্টিক বন প্রজাতির বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করে। গবেষক লুইজ বেরি এবং মাসিমো বোভিনি দ্বারা তৈরি এই বইটি সাধারণ মানুষের জন্য সহজবোধ্য ভাষায় উদ্ভিদ চিত্র এবং তথ্য সমৃদ্ধ।
এই নির্দেশিকায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো অ্যালকানট্যারিয়া গ্ল্যাজিওয়ানা (Alcantarea glaziouana), যা বিশ্বের বৃহত্তম ব্রোমেলিয়াডগুলির মধ্যে অন্যতম এবং এই অঞ্চলের স্থানীয় প্রজাতি। এছাড়াও নিওরেগেলিয়া ক্রুয়েন্টা (Neoregelia cruenta)-র মতো প্রজাতিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা জল ধরে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দ্বীপপুঞ্জটি আটলান্টিক বন বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত মোনা ক্যাগারা, চারটি দ্বীপ এবং একটি সামুদ্রিক এলাকা নিয়ে গঠিত, যা এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্যাগারা দ্বীপপুঞ্জ প্রাকৃতিক স্মৃতিসৌধ (MoNa Cagarras) প্রায় ১৭১ প্রজাতির উদ্ভিদ ধারণ করে, যার মধ্যে অ্যাস্টেরাসি (Asteraceae), মাইরটাসি (Myrtaceae) এবং ফ্যাবেসি (Fabaceae) পরিবারগুলি সর্বাধিক সমৃদ্ধ। এই দ্বীপপুঞ্জের ছয়টি প্রজাতি বর্তমানে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে, যার মধ্যে অ্যালকানট্যারিয়া গ্ল্যাজিওয়ানা (Alcantarea glaziouana) এবং নিওরেগেলিয়া ক্রুয়েন্টা (Neoregelia cruenta) উল্লেখযোগ্য। এই প্রজাতিগুলি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বোটানিক্যাল গার্ডেনে একটি ইন্টারেক্টিভ প্রদর্শনীও চলছে, যা ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত চলবে। এই প্রদর্শনীতে দ্বীপপুঞ্জের জীববৈচিত্র্য এবং সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলি তুলে ধরা হয়েছে। এটি প্রকৃতি প্রেমী এবং গবেষকদের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ।
ক্যাগারা দ্বীপপুঞ্জ প্রাকৃতিক স্মৃতিসৌধ (MoNa Cagarras) শুধুমাত্র উদ্ভিদ জগতের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি সামুদ্রিক পাখি, যেমন ফ্রাটিগ্যাট (frigatebirds) এবং ব্রাউন বুবি (brown boobies)-দের অন্যতম বৃহত্তম প্রজনন ক্ষেত্র। এখানে প্রায় ৫,০০০ ফ্রাটিগ্যাট এবং ২,৫০০ ব্রাউন বুবি বাস করে। এছাড়াও, ছয় প্রজাতির তিমি ও ডলফিন এই অঞ্চলের জলসীমায় বিচরণ করে, যা এটিকে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের এক অমূল্য ভান্ডার করে তুলেছে।
এই প্রকাশনাটি শুধুমাত্র একটি তথ্যভান্ডারই নয়, বরং এটি আমাদের পরিবেশের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে প্রতিটি প্রজাতিই বাস্তুতন্ত্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং তাদের সুরক্ষা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।