সৌদি আরবের আল-কুরআইনা শহরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের মাধ্যমে এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সৌদি হেরিটেজ কমিশন জানিয়েছে যে, রিয়াদের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই শহর থেকে প্রায় ৫০,০০০ বছর পুরনো প্রস্তর যুগের সরঞ্জাম ও মাটির পাত্রের ভাঙা অংশ পাওয়া গেছে। এই আবিষ্কারগুলি মধ্য প্রস্তর যুগের সময়কালের বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আল-ইয়ামামাহ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই খননকার্য পরিচালিত হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল এই অঞ্চলের প্রত্নতাত্ত্বিক মানচিত্র তৈরি করা। এই উদ্যোগের ফলে তৃতীয় ও দ্বিতীয় সহস্রাব্দ খ্রিস্টপূর্বাব্দের সময়কালের গোলাকার কাঠামোর সন্ধান পাওয়া গেছে, যা সমাধি হিসেবে ব্যবহৃত হত বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও, একটি প্রাচীন সড়কপথ আবিষ্কৃত হয়েছে যা একটি উপত্যকা থেকে মালভূমিতে বিস্তৃত এবং রিয়াদের দিকে প্রসারিত। এই সড়কটি সাইটটির ঐতিহাসিক গুরুত্বকে একটি যোগাযোগ কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরে। গবেষকরা আশা করছেন যে এই আবিষ্কারগুলি প্রাচীন বসতি স্থাপন, স্থাপত্য পদ্ধতি এবং আরব উপদ্বীপের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ঐতিহাসিক সময়কাল সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও গভীর করবে। এই প্রাপ্তিগুলি সৌদি আরবের সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই অঞ্চলের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য অন্বেষণের জন্য আল-ইয়ামামাহ প্রকল্পটি ২০২৪ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত চলবে এবং এতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যেমন জিওলোকেশন সিস্টেম, থ্রিডি মডেলিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। এই আবিষ্কারগুলি কেবল অতীতের প্রতিচ্ছবিই নয়, বরং এটি প্রমাণ করে যে সৌদি আরব মানব ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল ছিল। এই অঞ্চলের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলি মানবজাতির অভিবাসন এবং অভিযোজনের এক দীর্ঘ ও জটিল চিত্র তুলে ধরে, যা পূর্বে অনেক অজানা ছিল। এই ধরনের আবিষ্কারগুলি সৌদি আরবের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।