অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের কাছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ জাহাজডুবির সন্ধান পাওয়া গেছে, যা 'শিপwreck হান্টার্স অস্ট্রেলিয়া' দলের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এই আবিষ্কারগুলির মধ্যে রয়েছে ১৮৯৪ সালে ডুবে যাওয়া যাত্রী জাহাজ 'রোডন্ডো' এবং ১৯০২ সালে ডুবে যাওয়া নরওয়েজিয়ান বণিক জাহাজ 'ল্যাংস্টোন'। 'রোডন্ডো' জাহাজটি স্বর্ণের খনির যুগে যাত্রী পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হত, অন্যদিকে 'ল্যাংস্টোন' ছিল নরওয়ের প্রথম লোহা-নির্মিত জাহাজ। উভয় জাহাজই উন্নত সমুদ্রতল জরিপ প্রযুক্তি এবং ব্যাপক আর্কাইভাল গবেষণার মাধ্যমে সনাক্ত করা হয়েছে।
এই আবিষ্কারগুলি 'শিপwreck হান্টার্স অস্ট্রেলিয়া' সিরিজের দ্বিতীয় মৌসুমে প্রদর্শিত হচ্ছে, যা ২৭শে আগস্ট, ২০২৫ থেকে ডিজনি+ এ প্রচারিত হবে। এই সিরিজটি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার 'ট্রেজার কোস্ট' বরাবর দলের অভিযানগুলি তুলে ধরে, যেখানে আনুমানিক ১,৬০০ টিরও বেশি জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হয়। অভিযান দলে রায়ান চ্যাটফিল্ড, জনি ডেবনাম, নশ ফ্রিডম্যান, আন্দ্রে রেয়েরেকুরা এবং অ্যাশ Sutton-এর মতো বিশেষজ্ঞরা ছিলেন। তারা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ান মিউজিয়ামের সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকদের সাথেও সহযোগিতা করেছেন, যার মধ্যে ডঃ রস অ্যান্ডারসন এবং ডঃ ডেব শেফি অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
'রোডন্ডো' জাহাজটি ১৮৯৪ সালের ৭ই অক্টোবর পোলক রিফের কাছে ডুবে গিয়েছিল, যেখানে নেভিগেশন ত্রুটির কারণে এটি একটি বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। এতে চারজন যাত্রী মারা গিয়েছিল এবং বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা কাছাকাছি সালিসবারি দ্বীপে আশ্রয় নিয়েছিল। অন্যদিকে, 'ল্যাংস্টোন' জাহাজটি ১৯০২ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি একটি শক্তিশালী ঝড়ের কবলে পড়ে ন্যাচারালিস্ট রিফের কাছে ডুবে যায়। জাহাজের ১৩ জন ক্রু প্রাথমিকভাবে বেঁচে গিয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে ২২ বছর বয়সী আন্দ্রেয়াস লারসেন নামক একজন নাবিক অতিরিক্ত ক্লান্তির কারণে মারা যান।
এই জাহাজডুবিগুলিকে পানির নিচের টাইম ক্যাপসুল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা স্বর্ণের খনির যুগ এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের সামুদ্রিক ইতিহাস থেকে অমূল্য নিদর্শন সংরক্ষণ করে রেখেছে। দলটি এই জাহাজডুবিগুলিকে তাদের বর্তমান স্থানেই সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা করেছে, যাতে সেগুলি ঐতিহাসিক স্থান এবং সামুদ্রিক আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে যেতে পারে। এই আবিষ্কারগুলি কেবল ঐতিহাসিক গুরুত্বই বহন করে না, বরং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের উপরও প্রভাব ফেলে, কারণ জাহাজডুবিগুলি প্রায়শই নতুন সামুদ্রিক জীবনের জন্য আবাসস্থল তৈরি করে জীববৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করে।